ডিএনএ পরীক্ষার জন্য আনারকন্যা ডরিনকে ডেকেছে কলকাতা পুলিশ

আনোয়ারুল আজিম আনার। ফাইল ছবি

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনারের মরদেহের খণ্ডিত অংশের ফরেনসিক প্রতিবেদন পেয়েছে ভারতের সিআইডি। এর প্রেক্ষিতে আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিনকে ডিএনএ নমুনা দিতে কলকাতা পুলিশ ডেকেছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিমের সঙ্গে এমপি আনারের মেয়ে, ভাই ও ব্যক্তিগত সহকারী কিছুদিনের মধ্য কলকাতায় যাবেন বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে ডরিনসহ অন্যরা ভারতের ভিসা পেয়েছেন।

এই বিষয়ে এমপি আনারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ভারতের সিআইডি ডরিনকে ফোন করে ডিএনএ নমুনা দিতে এক সপ্তাহের মধ্যে ভারতে যাওয়ার কথা বলেছে। আমরা বিষয়টি ডিবি পুলিশকে জানিয়েছি। ডিবির একটি টিমের সঙ্গে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারতে যাবো।’ 

এদিকে আনার হত্যার অন্যতম আসামি সিয়ামকে নেপাল থেকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পুলিশ। তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে ডিএমপির ডিবির টিম। ডিবি বলছে, সিয়াম হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীনের ঘনিষ্ঠ। শাহীন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছে। ফলে সিয়ামের কাছ থেকে আনার হত্যার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার আশা করছে ডিবি। 

ঢাকার ডিবি পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টুর সংশ্লিষ্টতা আছে। সাক্ষ্য-প্রমাণে হত্যা পরিকল্পনায় তার জড়িত থাকার বিষয় উঠে এসেছে। এর আগে মিন্টুর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু ওরফে গ্যাস বাবুকে গত ৬ জুন রাতে আটক করে ডিবি। ৯ জুন তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ড চলাকালীন আনার হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হন বাবু। তারপর আদালত বাবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। বাবুর জবানবন্দিতেই আনার হত্যার নেপথ্যে মিন্টুর নাম আসে।

গত ২৩ মে শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্যা, ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া ও সেলেস্তি রহমানকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা তিনজনই ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন।

তবে আনার হত্যায় এখনও মূল রহস্য রয়েছে শাহীনকে ঘিরে। তাকে দেশে ফেরাতে বাংলাদেশ সরকারের জোর উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। 

এমপি আনার ১২ মে ভারতে যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত হিসাবে এ পর্যন্ত ১২ জনের নাম বেরিয়ে এসেছে। এদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাতজন। তারা হলেন বাংলাদেশে গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর, সেলেস্তি, বাবু ও মিন্টু। এছাড়া ভারতে গ্রেপ্তার আছে সিয়াম ও কসাই জাহিদ। আর তিনজনের নাম এসেছে, যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয়।