শেখ হাসিনার সফর বাংলাদেশ-ভারতের মৈত্রীর গভীরতার প্রতিফলন: জয়শঙ্কর

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের বন্ধুত্ব কতটা গভীর তার উদাহরণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর।

তিনি বলেন, ভারত সরকারের নতুন মেয়াদে প্রথম রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে শেখ হাসিনার সফর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে তারা কতটা গুরুত্ব দেন তা প্রমাণ করে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বাংলাদেশ তাদের ‘প্রতিবেশী প্রথম’, ‘অ্যাক্ট ইস্ট’, সাগর ও ইন্দো-প্যাসিফিক নীতির সংযোগস্থলে রয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ শেয়ার করা এক বার্তায় জয়শঙ্কর বলেন, সত্যিকারের ভালো প্রতিবেশী হওয়ায় আমাদের সম্পর্ক ঐতিহ্যবাহী ক্ষেত্রগুলোকে সুসংহত করছে এবং নতুন ভিত্তি তৈরি করছে।

তিনি বলেন, আজ যেসব সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে এর মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা স্পষ্ট হয়।

জয়শঙ্কর বলেছেন, সমুদ্র থেকে মহাকাশ, ডিজিটাল, সবুজ ও স্বাস্থ্য, সামরিক, রেল ও দুর্যোগ- মানবীয় উদ্যোগের সব ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ-ভারতের অংশীদারিত্ব আরও দৃঢ় থেকে শক্তিশালী হবে।

এক নজরে ফলাফল

১. ভারত-বাংলাদেশ ডিজিটাল অংশীদারিত্বের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি।

২. ভারত-বাংলাদেশ সবুজ অংশীদারিত্বের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি।

৩. সামুদ্রিক সহযোগিতা ও সুনীল অর্থনীতি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই।

৪. ইন-স্পেস এবং বাংলাদেশের আইসিটি ও টেলিকম মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই।

৫. রেল যোগাযোগের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের উভয় সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই।

৬. বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বিওআরআই) এবং ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশানোগ্রাফিক ইনস্টিটিউটের (এনআইও) মধ্যে সিএসআইআর’র আওতায় সমুদ্রবিজ্ঞান ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক সই।

৭. কৌশলগত ও অপারেশনাল স্টাডিজের ক্ষেত্রে সামরিক শিক্ষা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিসেস স্টাফ কলেজ (ডিএসএসসি) এবং মিরপুরের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই।

৮. স্বাস্থ্য ও ওষুধের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতাপত্রের নবায়ন।

৯. দুর্যোগ মোকাবিলা, সহনশীলতা এবং প্রশমনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য এনডিএমএ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতাপত্রের নবায়ন।

১০. মৎস্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক নবায়ন।

যেসব ঘোষণা এলো:

১. বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীদের জন্য ই-ভিসা চালু।

২. বাংলাদেশের রংপুরে ভারতের নতুন সহকারী হাইকমিশন প্রতিষ্ঠা করা।

৩. রাজশাহী ও কলকাতার মধ্যে নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু।

৪. চট্টগ্রাম ও কলকাতার মধ্যে নতুন বাস পরিষেবা চালু।

৫. গেদে-দর্শনা এবং হলদিবাড়ি-চিলাহাটির মধ্যে দলগাঁও পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রেন পরিষেবার চালু।

৬. অনুদান সহায়তার আওতায় সিরাজগঞ্জে ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) নির্মাণ।

৭. ভারতীয় গ্রিডের মাধ্যমে নেপাল থেকে বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু।

৮. গঙ্গার পানি চুক্তি নবায়ন সম্পর্কিত আলোচনার জন্য যৌথ কারিগরি কমিটি গঠন।

৯. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তিস্তা নদী সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনাবিষয়ক প্রকল্পের জন্য কারিগরি প্রতিনিধিদলের বাংলাদেশ সফর।

১০. বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য ৩৫০টি প্রশিক্ষণ পর্ব চালু।

১১. মুক্তিযোদ্ধা প্রকল্পের আওতায় চিকিৎসা প্রত্যাশী রোগীদের জন্য খরচ  সর্বোচ্চ সীমা ৮ লাখ টাকা করা।