রাসেলস ভাইপার নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ নির্দেশনা

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া, বোড়া বা উলুবোড়া) উপদ্রবের ব্যাপারে সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এবং জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ সম্পর্কে বিশেষ সাবধানতা ও সচেতনতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো দিক নির্দেশনামূলক বার্তায় এ পরামর্শ দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, রাসেলস ভাইপারের উপস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে মানুষের সাথে এই সাপের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই সাপ সাধারণত নিচু ভূমির ঘাসবন, ঝোঁপজঙ্গল, উন্মুক্ত বন, কৃষি এলাকায় বাস করে এবং মানুষের বসতি এড়িয়ে চলে। সাপটি মেটে রঙের হওয়ায় মাটির সাথে সহজে মিশে যেতে পারে। মানুষ খেয়াল না করে সাপের খুব কাছে গেলে সাপটি বিপদ দেখে ভয়ে আক্রমণ করে।

রাসেলস ভাইপার দক্ষ সাঁতারু হওয়ায় নদীর স্রোতে ও বন্যার পানিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তৃত হয়েছে। তাই, সকলকে সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ জানানো হলো।

সাপের কামড় এড়াতে করণীয়

১. যেসব এলাকায় রাসেল ভাইপার দেখা গেছে সেসব এলাকায় চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন।

২. লম্বা ঘাস, ঝোঁপঝাড়, কৃষি এলাকায় হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন। গর্তের মধ্যে হাত-পা ঢুকাবেন না।

৩. সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ করার সময় বুট এবং লম্বা প্যান্ট পরুন।

৪. রাতে চলাচলের সময় অবশ্যই টর্চ লাইট ব্যবহার করুন।

৫. বাড়ির চারপাশ পরিস্কার ও আবর্জনামুক্ত রাখুন।

৬. পতিত গাছ, জ্বালানি লাকড়ি, খড় সরানোর সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন।

৭. সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না।

৮. প্রয়োজনে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন বা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন।

সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে করণীয়

দংশিত অঙ্গ নড়াচড়া করা যাবে না। পায়ে দংশনে বসে যেতে হবে, হাঁটা যাবে না। হাতে দংশনে হাত নড়াচাড়া করা যাবে না। হাত পায়ের গিড়া নাড়াচাড়ায় মাংসপেশির সংকোচনের ফলে বিষ দ্রুত রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে বিষক্রিয়া করতে পারে।

আক্রান্ত স্থান সাবান দিয়ে আলতোভাবে ধুতে হবে অথবা ভেজা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে মুছতে হবে।

ঘড়ি বা অলঙ্কার বা তাবিজ, তাগা ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলুন।

দংশিত স্থানে কাঁটবেন না, সুচ ফোটাবেন না, কিংবা কোন রকম প্রলেপ লাগাবেন না বা অন্য কিছু প্রয়োগ করা উচিত নয়।

সাপে কাটলে ওঝার কাছে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবেন না। যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান।

আতঙ্কিত হবেন না, রাসেলস ভাইপারের বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম আছে এবং সব জায়গায় হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভেনম রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।