নতুন প্রজন্ম প্রতিবন্ধী হতে পারে: ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত

ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত। ফাইল ছবি

অপব্যবহার রোধে রাতে মোবাইল ফোনের ব্যবহার সীমিত করা উচিত বলে মনে করেন কুমিল্লা-৭ আসনের সংসদ সদস্য প্রাণ গোপাল দত্ত। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন,  ‘মোবাইল ফোনের অপব্যবহারের কারণে নতুন প্রজন্ম প্রতিবন্ধী হতে পারে।’ একইসঙ্গে কানের রোগীর সংখ্যা বাড়ার পেছনে মোবাইল ফোন দায়ী বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

আজ শনিবার জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবা উন্নতির জন্য চিকিৎসকদের বেতন ভাতার পাশাপাশি গবেষণা, আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব করেন প্রাণ গোপাল দত্ত।
 
তিনি বলেন, ‘কোনো একটা অ্যাপস সৃষ্টি করে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে মোবাইল টাওয়ারগুলো নিষ্ক্রিয় করা যায় কি-না? অথবা সেই মোবাইল টাওয়ার যাতে ফ্রিল্যান্সিং বা বিদেশি মুদ্রা অর্জনের বিকল্প পথ ছাড়া অন্যান্য কোনো ক্ষেত্রে ব্যবহার না হয় সে ক্ষেত্রে আমাদের নজর দেওয়া উচিত। না হয় আমার রোগীর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, ১০ বছর থেকে শুরু করে সবার কানে সমস্যা। কানে শুনি না, লেখাপড়ায় মন দিতে পারি না। তাই এমন কোনো কিছু আবিষ্কার করা উচিত যাতে করে রাতে আমাদের তরুণ প্রজন্ম এ প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকবে।’ 

প্রস্তাবিত বাজেটে কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ রাখায় বৈধ কর দাতাদের কর প্রদানে অনীহা তৈরি হবে বলেও মনে করেন সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ‘বাজেটে সাদা ও কালোটাকা নিয়ে কথা হয়েছে। একজন কর দাতা হিসেবে আমার ৩০ লাখ টাকা থাকলে ৩০ শতাংশের বেশি কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু যিনি গত বছর টাকা দেখাননি, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সেই অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধ করে নিচ্ছেন। এতে করে সঠিক করদাতারা কর দিতে অনিচ্ছা পোষণ করবেন।’ 

প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, ‘আমরা সব সময় কালো ও সাদা টাকা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু ইনফরমাল গ্রে-মানি (কর ফাঁকি সম্পর্কিত) অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি যার ট্যাক্স দেওয়া হয় না। যাকে কোনো অবস্থানে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। সেটা নিয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় কিছু বলেননি। গ্রে-মানি অপ্রদর্শিত আয়ের চেয়েও অনেক খারাপ। একে সংকুচিত না করা হলে অর্থ পাচার বন্ধ করা যাবে না।’ 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই উপাচার্য (ভিসি) বলেন, সবচেয়ে ব্যয়বহুল হচ্ছে স্বাস্থ্য খাত। যেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, গবেষণা, চিকিৎসা উপকরণের দাম আকাশচুম্বী। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ভাষায় শিক্ষা ও চিকিৎসা থাকা উচিত সরকারি খাতে। একে বেসরকারিকরণ করা হলে শিক্ষা ও চিকিৎসার কোনো গুণগত মানের পরিবর্তন হয় না, তখন সেটা হয়ে যায় একটা পণ্য। এখন পৃথিবীজুড়ে এটা পণ্য হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে আপনার টাকা আছে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে চিকিৎসা পাবেন না। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের জন্য দেখার কিছু নেই। 

কালোটাকা সাদা করার সুযোগের সমালোচনার জবাবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে কালোটাকা আমাদের মার্কেটে আছে। এ টাকা কীভাবে ব্যবহার করবেন সেই উপায় কেউ বাতলায় না, সমালোচনা করে। দেখলাম বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমালোচনা করে বলছেন এতে নাকি দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু উনি বলেন না ওনার নেত্রী খালেদা জিয়া ৫ শতাংশ কর দিয়ে ১ কোটি ৩৩ লাখ ১৪ হাজার ৭১০ টাকা সাদা করেছেন। এটা বলেন না, এটা তাদের মনে থাকে না। এটা মনে রাখার জন্য বলব।’
 
সংরক্ষিত মহিলা আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য নুরুন নাহার বেগম বেগম বলেন, বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ থাকল। এ সুযোগ নিয়ে অনেক অপরাধী দেশের বাইরে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি দেশে কালোটাকা সাদা করতে পারবে।