খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে ‘পেসমেকার’ বসানো সম্পন্ন

ফাইল ছবি

হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা কমাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বুকে পেসমেকার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, রবিবার (২৩ জুন) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সফলভাবে খালেদা জিয়ার বুকে পেসমেকার বসিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা ম্যাডামের বুকে পেসমেকার বসানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছি।’

আগামী ৭২ ঘণ্টা খালেদা জিয়াকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে বিকালে খালেদা জিয়ার পেসমেকার বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন চিকিৎসকরা।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ বলেন, স্টেন্টিং দিয়ে চিকিৎসা করা হলেও তার হার্টের ব্লকেজ সমস্যা ছিল।

ডা. জাহিদ আরও বলেন, ‘পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মেডিক্যাল বোর্ড তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

বিএনপি ও খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন অধ্যাপক জাহিদ।

২০২২ সালের ১১ জুন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে একাধিক ব্লক ধরা পড়ে। এই ব্লকেজগুলোর মধ্যে একটিতে ৯৫ শতাংশ ব্লক ছিল এবং সেই সময় স্টেন্ট বসানো হয়েছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল বোর্ডের এক সদস্য বলেন, শনিবার ভোরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে তারা তার হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতার বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। অবশেষে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বুকে পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে দ্রুত সিসিইউতে ভর্তি করা হলে যেখানে একটি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়।

দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট এবং চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বাধীন মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বারবার হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

২০২১ সালের নভেম্বরে তার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকে চিকিৎসকরা বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন।

এর আগে খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে গত বছরের ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিআইপিএস পদ্ধতি) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।