পরীমণিকাণ্ডে চাকরি হারাচ্ছেন সেই এডিসি সাকলায়েন

চিত্রনায়িকা পরীমণির সঙ্গে ‘বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক’ স্থাপনের অভিযোগে চাকরি হারাচ্ছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) গুলশানে বিভাগের সাবেক উপ-কমিশনার (এডিসি) গোলাম সাকলায়েন।

সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮-এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই বিধিমালার ৪-এর উপবিধি ৩(খ) অনুযায়ী তাকে ‘গুরুদণ্ড’ হিসেবে চাকরি থেকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর’-এ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

গত ১৩ জুন জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা-২ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সচিব বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে সাকলায়েনের বিরুদ্ধে গৃহীত সিদ্ধান্ত বিষয়ে পিএসসির পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

পরীমণিকাণ্ডের পর আলোচনায় আসা সাকলায়েনকে ডিএমপির ডিবি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। বর্তমানে তিনি ঝিনাইদহে পুলিশের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত।

এ সংক্রান্ত জননিরাপত্তা বিভাগের চিঠিতে বলা হয়েছে, পরীমণির সঙ্গে তৎকালীন এডিসি গোলাম সাকলায়েনের সম্পর্কের বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা সমালোচনার জন্ম দেয়। সাকলায়েন পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হয়ে সরকারি দায়িত্বের বাইরে চিত্রনায়িকা পরীমণির সঙ্গে অতিমাত্রায় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন।

এতে আরও বলা হয়, বিবাহিত ও এক সন্তানের জনক হওয়া সত্ত্বেও পরীমণির সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, পরীমণির সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন ও নিজের সরকারি বাসভবনে স্ত্রীর অবর্তমানে সময় কাটানোর মতো ঘটনা প্রচারিত হওয়ায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ওই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্য পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তা বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩ (খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না, তা জানতে চেয়ে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সাকলায়েন এ নোটিশের যে জবাব দিয়েছেন তা সন্তোষজনক বিবেচিত না হওয়ায় তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৭(১০) বিধি এবং বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পরামর্শকরণ) রেগুলেশনস, ১৯৭৯-এর ৬ নম্বর রেগুলেশন অনুযায়ী এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বিসিএস পুলিশ ৩০তম ব্যাচের কর্মকর্তা সাকলায়েন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা করেছেন। ৩০তম ব্যাচের পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন তিনি।