হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গুলশানের বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বুকে পেসমেকার বসানোসহ হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর মঙ্গলবার (২ জুলাই ) সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন তিনি।

খালেদার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা ও সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করেই বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি বলেন, পেসমেকার বসানোর পর বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তাই চিকিৎসকরা আগের মতোই বাসায় তাকে চিকিৎসা দেবেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বিকাল সাড়ে ৫টায় হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে বাসায় পৌঁছান।

গত ২২ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে গুলশানের বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে খালেদা জিয়াকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

পরদিন অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল সফলভাবে তার বুকে পেসমেকার বসিয়ে দেন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।

২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ডের অধীনে নিয়মিত হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে ওই বছরই আরেকটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তার গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশত্যাগ না করার শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এরপর থেকে তাকে কারাগারের বাইরে রাখতে তার মুক্তির মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে।

২০২১ সালের নভেম্বরে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে তার চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন।

গত বছরের ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেটে ও বুকে পানি জমে যাওয়া ও লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপ্যাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট (টিপস প্রসিডিউর) নামে পরিচিত হেপাটিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।