কী ঘটে ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে!

‘উন্নয়নসঙ্গী’ চীন সফরের নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরসূচি সম্পূর্ণ না করে দেশ ফেরা এবং প্রতিশ্রুত অর্থ না পাওয়ায় স্বাভাবিক কারণে তার এ সফর নিয়ে আলোচনা চলছে নানা মহলে।  দ্য মিরর এশিয়াও চেষ্টা করেছে ‘প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং ট্রিপ’ নিয়ে খোঁজ নেয়ার।

যোগাযোগ করা হলে তার সফরসঙ্গী কয়েকজন সাংবাদিকসহ একাধিক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর নজিরবিহীনভাবে ফ্লপ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, এ সফরে বেইজিং তার প্রতিশ্রুত ঋণ সহায়তা দেয়নি। এ ছাড়া সফরের কোনো কর্মসূচীতেই চীনা কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা দেখা যায়নি।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের এক সংবাদিক বলছেন, সফরের পুরোটা সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলো বাংলাদেশ থেকে যাওয়া তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী এসএসএফ। তারাই সবখানে তাকে এক প্রকার কর্ডন করে রাখতো। এর বাইরে প্রথমদিন চীনের কিছু নিরাপত্তা সদস্যকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু তারাও গেটের বাইরে ছিল।

সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে সর্বমোট ১৯৬ জন সফরসঙ্গী ছিলেন।তাদের মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, একাত্তর টেলিভিশনের মোজাম্মেল বাবুসহ ৭ থেকে ৮ জন সিনিয়র সাংবাদিকও ছিলেন। কিন্তু তাদেরও প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে ভিড়তে দেয়নি এসএসএফ। ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন এমন একটি সূত্র জানায়, দৃশ্যত সবকিছুতেই এসএসএফ এবার বাড়াবাড়ি করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পূর্বনির্ধারিত বৈঠকটি এক পর্যায়ে বাতিল হওয়ার উপক্রম হয় জানিয়ে একটি সূত্র টিএমএকে জানায়, অনেক দৌঁড়ঝাঁপের পর ঢাকাস্থ চাইনিজ রাষ্ট্রদূত ওয়েন ইয়াওকে ধরে শেষ পর্যায়ে বৈঠকটির আয়োজন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ রক্ষা করা হয়।

এর পরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে ২১ সমঝোতা ও প্রটোকল সই হয়। ওই বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী গ্রেট হল অব দ্য পিপলে যখন বক্তব্য রাখেন তখন শ্রোতা হিসেবে গুটিকয় লোক ছিলেন। চীনের কর্মকর্তা পর্যায়ের তেমন উপস্থিতি ছিল না। সূত্রটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী দেশের মতো বিদেশেও বিভিন্ন সময় লিখিত বক্তব্যের বাইরে স্বতঃস্ফুর্ত হয়ে অনেক কথা বলেন। কিন্তু বুধবার চীনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে তিনি কেবল লিখিত বক্তব্য পড়েছেন। 

এর আগে মঙ্গলবার দেশটির একটি হোটেলে আয়োজিত ব্যবাসায়িক সম্মেলনে দেশটির ব্যবসায়ীদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই অনুষ্ঠানেও চীনের ব্যবসায়ীদের তেমন উপস্থিতি ছিল না।