শিক্ষকরা আন্দোলনে, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে ইউজিসির চিঠি

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এ চিঠি পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনার আলোকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।

তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুরও আগে থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে গেছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। বিষয়টি ইউজিসির জানা থাকলেও শুধু শিক্ষার্থীদেরই ক্লাসে ফেরাতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এমন চিঠির পর প্রশ্ন উঠছে, তাহলে ক্লাস করাবেন কারা?

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে কোটা সংক্রান্ত একটি পর্যালোচনার কপি আমাদের পাঠানো হয়েছে। সেই কপিটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের পাঠানো হয়েছে।’

শিক্ষকরা ক্লাস বর্জনে রয়েছেন, এ ব্যাপারে ইউজিসির পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এর জবাব আমি দিতে পারব না।’

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ বাতিলের একযোগে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও। এমন পরিস্থিতিতে কার্যত অচল দেশের উচ্চ শিক্ষাঙ্গন। বন্ধ রয়েছে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম।

এখন পর্যন্ত শিক্ষকদের আন্দোলন বন্ধে বা সংকট সমাধানে দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি ইউজিসির। এটিকে ‘হাস্যকর’ হিসেবে অভিহিত করেছেন একজন উপাচার্য। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ইউজিসির কথায় শিক্ষার্থীরা যদি ক্লাসে ফেরেও, ক্লাস নেবে কারা? তিনি বলেন, ‘কোনো নির্দেশনা দেওয়ার আগে চিন্তা-ভাবনা করে দেওয়া উচিত।’

গতকাল বৃহস্পতিবার ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামানের সই করা চিঠিতে ‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের প্রদত্ত পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা প্রতিপালন প্রসঙ্গ’ উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এসব পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হলো।

চিঠিতে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের দায়ের করা দুটি সিভিল পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। আদালতের দেওয়া এসব পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হলো।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের ফেডারেশন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এখনো যেহেতু আমাদের দাবি মানা হয়নি, তাই আমরা দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশন থেকে কী সিদ্ধান্ত আসে সেদিক বিবেচনা করে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’