পুলিশবেশে পণ্যবাহী গাড়িতে ডাকাতি করত তারা
ঢাকাসহ আশপাশের জেলা ও সারাদেশের বিভিন্ন মহাসড়কগুলোতে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পোশাক পরে পণ্যবাহী গাড়ি থামার সংকেত দেয়। তারপর গাড়ির চালক ও সহযোগীদের হাত-পা বেঁধে রেখে গাড়িসহ পণ্য ডাকাতি করে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে একটি ডিমের গাড়ি ডাকাতির ঘটনায় এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ।
সাভারের চান্দিনায় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে ডাকাতির ঘটনায় অন্য একটি অভিযানে পৃথক ডাকাত দলের সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত সপ্তাহে রাজধানীসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় অভিযান চালিয়ে দুই ডাকাত চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক দল।
মহাসড়কে পুলিশবেশে ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তাররা হলেন আসলামুল হক আসলাম ওরফে বেলাল (৩৭), রমজান শেখ ওরফে কালু (৪০), মেহেদী শেখ হিরা (৩৩), জমির খান (৩৬) ও মো. জহিরুল ইসলাম চকিদার (৫০)। অপর ডাকাত দলের গ্রেপ্তার সদস্যরা হলো- জাহাঙ্গীর আলম (৪২), মো. মিরন ওরফে সুজন (৫০), মো. মেহেদী হাসান রাজীব (৩০), আব্দুল মতিন (৪২), বাদল মুন্সী(৪৫) ও সাগর ইসলাম (২৪)। তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মডেলের পাঁচটি গাড়ি, পুলিশের ওয়্যারলেস, জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে।
রবিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবির কনফারেন্স রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, মহাসড়কে ডিবি পুলিশের পোশাক পরে লেজার লাইট দিয়ে সংকেত দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি থামিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। এই চক্রটি ধারাবাহিকভাবে মূল্যবান যেকোনো পণ্যবাহী গাড়ি দেখলেই সংকেত দিতো। সম্প্রতি রুপগঞ্জে ডিমবাহী গাড়ি থামিয়ে চালকের হাত-পা বেঁধে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই চক্রটি ডাকাতি করা পণ্য বিক্রি করত। পাশাপাশি ডাকাতি করে নেওয়া গাড়ি দিয়ে তারা আবার ডাকাতি শুরু করে।
হারুন আরও বলেন, আমাদের ধারাবাহিক অভিযানে সাভারের চান্দিনায় এক ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে যাওয়ার পথে ডাকাতির শিকার হন। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এইসব মামলা তদন্ত করতে গিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা বেশ কয়েকটি মামলা শনাক্ত করা হয়েছে। সে সকল ঘটনায় এই দুই ডাকাত দলের সদস্যরা জড়িত।
অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, আমরা বলতে চাই দেশের কোথাও ডাকাতির ঘটনা ঘটলে অবশ্যই মামলা করবেন। কারণ মামলা হলে তখন এই সকল চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করতে পারবে। কারণ গ্রেফতার হওয়া ডাকাত দলের প্রত্যেক সদস্যের বিরুদ্ধে পাঁচ থেকে ১২টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তারা সবাই পেশাদার ডাকাত দলের সদস্য।