আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের

আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত শিক্ষকদের

সর্বজনীন পেনশনের নতুন স্কিম (কর্মসূচি) ‘প্রত্যয়’-এর বাস্তবায়ন এক বছর পিছিয়ে গেছে। তবে চলমান আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এ স্কিমের বিপক্ষে অবস্থান নেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা।

রোববার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার এ মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে সরকারি কর্মচারীদের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা ও তাদের অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলোর নতুন কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ‘প্রত্যয়’ প্রযোজ্য হবে ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে।

ফলে ২০২৫ সালের ১ জুলাই বা তার পরে সরকারি চাকরিতে যারা নতুন যোগ দেবেন বা স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত ইত্যাদি সংস্থায় যারা নতুন যোগ দেবেন, বাধ্যতামূলকভাবে তারা সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় আসবেন।

এদিকে, প্রত্যয় চালুর সিদ্ধান্তটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে এর বাস্তবায়নে গত মার্চ থেকেই বিরোধিতা করে আসছিল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ফেডারেশন বলছে, এ সিদ্ধান্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর এক নীরব ষড়যন্ত্র এবং প্রত্যয় চালু হলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধা কমবে।

তাই গত ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা। দুই সপ্তাহ ধরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস, পরীক্ষা ও দাফতরিক কাজ সব বন্ধ।

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি নিয়ে ১৩ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতাদের সাথে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অন্য নেতারা। বৈঠক শেষে ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির আওতায় সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হবে ২০২৫ সালের ১ জুলাই। এর আগে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে পেনশনে যোগদানের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা সঠিক নয়। সবার মতো তারাও ২০২৫ সালের ১ জুলাইয়ে যোগ দেবেন, এটা তাদের পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে।

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় অনলাইনে।

বৈঠকের পর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আমাদের দাবি পূরণ হয়নি, তাই আমাদের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। বৈঠকে আমাদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে। আশা করছি, আমাদের দাবি পূরণ হবে।

শুধু সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি বাতিল নয়, মোট তিন দফা দাবি আদায়ের লড়াই করছেন দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বাকি দুটি হচ্ছে- সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনকাঠামো।