বেরোবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২

বেরোবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ২

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রোববার দিবাগত রাতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সহস্রাধিক শিক্ষার্থী মিছিল বের করেন। মিছিল শেষে ফেরার পথে ছাত্রলীগের অতর্কিত হামলায় আন্দোলনরত ২ শিক্ষার্থী আহত হন। অপরদিকে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের দাবি তারাই উল্টো হামলার স্বীকার হয়েছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার (১৪ জুলাই) দিবাগত রাত ২টায় মহাসড়কে মিছিল শেষে আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে এসেছিলাম। মেয়েদের হলে পৌঁছে দিয়ে যার যার মতো মেস বা হলে যাচ্ছিলাম। এসময় আগে থেকেই দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে প্রস্তুত থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও ছাত্রলীগকে ধাওয়া করে। ছাত্রলীগ তখন ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। আমাদের অনেকেরই গায়ে আঘাত লেগেছে। দুজন অসুস্থ হওয়ায় তাদের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বেরোবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কারী শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, রাতেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করেছি। শেষমুহূর্তে ছাত্রলীগ অযাচিতভাবে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। বিচার চাই।

বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, আমাদের কাছে মেসেজ আসে বহিরাগতরা লাঠিসোঁটা নিয়ে ক্যাম্পাসে আসছেন। তখন আমরা হলের শিক্ষার্থীরা হলের পাশে অবস্থান নেই, যাতে কোনও বহিরাগত হলে যেতে না পারে। বহিরাগতরা নিজেদের রাজাকার বলছিলেন আর আমাদের ভুয়া বলছিলেন। হলের শিক্ষার্থীরা নিজেদের বাঙালি বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এসময় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করে। যাত্রী ছাউনি ভাঙচুর করেন। বহিরাগতরা কীভাবে ক্যাম্পাসে ঢুকে ভাঙচুর করলো এর সুষ্ঠু তদন্ত হোক।

এর আগে রোববার রাত সাড়ে ১১টা থেকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে স্লোগান দিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহীদ মুখতার ইলাহি হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে ভেসে আসে স্লোগানের আওয়াজ। এসময় তারা মিছিল বের করেন। মিছিলটি নিয়ে শিক্ষার্থীরা রংপুরের মর্ডান মোড়, দর্শনা, লালবাগ, পার্ক মোড় হয়ে আবারও মর্ডান মোড়ে গিয়ে অবস্থান করেন।

এসময় মিছিল থেকে শিক্ষার্থীদের ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘কীসের তোমার অধিকার, তুমি একটা রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে, সরকার সরকার’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

প্রসঙ্গত, চীন ফেরত পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্রিক এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? তাদের নাতি-নাতনিরা পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা পাবে? এটা দেশবাসীর কাছে আমার প্রশ্ন। তাদের অপরাধটা কী? নিজের জীবন বাজি রেখে, নিজের পরিবার সব ফেলে যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, দিনরাত খেয়ে না খেয়ে, কাদামাটি পেরিয়ে, ঝড়বৃষ্টি সব মোকাবিলা করে যুদ্ধ করে এ দেশে বিজয় এনে দিয়েছিলেন। তারা বিজয় এনে দিয়েছিলেন বলেই তো আজ সবাই উচ্চপদে আসীন। আজ গলা বাড়িয়ে কথা বলতে পারছেন। তা না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে থাকতে হতো।’