ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতন

ছাত্রীদের ওপর ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতন

সোমবার কোটাবিরোধী আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছাত্রীদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এ দিন দুপুরের পর থেকে ছাত্রলীগ আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা শুরু করে। পিস্তল, রামদা লাঠি, লোহার পাইপ, কাঠ দিয়ে এদিন নির্বিচারে ছাত্রলীগ হামলা চালায়। তাদের হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। চিকিৎসা নিতে গেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগেও হামলা চালায় তারা। এছাড়া ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ইডেন মহিলা কলেজের এক ছাত্রী নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছেন।

শাহবাগ থেকে শুরু করে টিএসসি, উপাচার্যের বাসভবন, চানখারপুল এলাকা পর্যন্ত ছাত্রলীগ ধাওয়া দিয়ে হামলা চালায় ছাত্রছাত্রীদের ওপর। এ সময় তারা ছাত্রীদের বিশেষভাবে লক্ষ করে হামলা চালায় বলে ছবি, ভিডিও, প্রত্যক্ষদর্শী ও সাংবাদিকদের সূত্রে জানা গেছে। 

ছাত্রীদের ওপর হামলার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। একটি ছবিতে দেখা যায়- অসহায়, নিরস্ত্র দুই ছাত্রীর ওপর লাঠি দিয়ে হামলে পড়েছেন এক ছাত্রলীগ কর্মী। 

আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, রক্তাক্ত মুখে কাঁদছেন এক ছাত্রী। উপাচার্যের বাসভবনের সামনেও ছাত্রীদের ওপর হামলার ছবি পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে খোঁচাতে দেখা গেছে ছাত্রলীগ কর্মীদের। 

এদিকে, ছাত্রলীগের হামলায় আহত ইডেন কলেজের এক ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। কোটার যৌক্তিক সংস্কার করে আইন প্রনয়ণের একদফা দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত হন শাহিনুর সুমি নামে ওই শিক্ষার্থী। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, সোমবার টিএসসিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীরা সমাবেশ চলার মধ্যেই বেলা তিনটার দিকে বিজয় একাত্তর হলের সামনে সংঘর্ষের সূচনা হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি দল বিজয় একাত্তর হলে প্রবেশ করতে গেলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। এ নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন আশপাশের হলগুলোর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসে একজোট হয়ে সংঘর্ষে যোগ দেন।

এরপর ছাত্রলীগের হামলা বাড়তে থাকে। তাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন অংশে ভাগ হয়ে আন্দোলনকারীদের পেটাতে থাকেন।