বিদ্যুৎবিহীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতেও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার খবর

ছবি: দ্য মিরর এশিয়া

দিনভর হামলা চালানোর পর গভীর রাতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ চড়াও হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে দ্য মিরর এশিয়া এসব তথ্য জানতে পেরেছে।

সোমবার সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এতে কয়েকশ’ শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক বেশ কয়েকজন।

হামলার সময় হেলমেট পরে ছিল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সঙ্গে তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। এমনকি, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েও হামলা করে তারা। একজনকে গুলি বর্ষণ করতেও দেখা গেছে। এছাড়া ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন সূত্রের খবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এখনও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে ছাত্রলীগ ও তাদের সঙ্গী বহিরাগতরা।

রাতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতরা মঙ্গলবার সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

জানা গেছে, সোমবার বিকেল ৩টার পর বিজয় একাত্তর হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের আবাসিক হলগুলোতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এরপর তারা কার্জন হল এলাকার আবাসিক হলগুলোতে হামলা চালায়।

বিকেল ৫টার দিকে প্রথমে শহীদুল্লাহ হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। এসময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায়ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

প্রথম দফার হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আশাপাশের থানা ও ওয়ার্ডগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসে ছাত্রলীগ। তাদের সহায়তায় পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ও পুরো ক্যাম্পাসে তারা তাণ্ডব চালায়।

বেলা ৩টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা জেলা ছাত্রলীগ, ঢাকা কলেজ, ঢাবির পাশ্ববর্তী লালবাগ, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীর চর, পল্টন, শাহবাগ মোড় হয়ে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক, অছাত্ররা দোয়েল চত্বর ও শাহবাগ মোড় হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এসময় তাদের হাতে হকিস্টিক, ক্রিকেট স্ট্যাম্প, জিআই পাইপ ও লাঠির মতো দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়।

এসব বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় দুটি প্রবেশ পথেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশের সামনে দিয়ে তারা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিতে দিতে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে ছাত্রলীগের সমাবেশে এসে মিলিত হয়।

৩টার পরপরই সম্মিলিতভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর তারা হামলা চালায় তারা। তাদের হামলায় অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। ঢাকা মেডিকেলের ভর্তি রেজিস্টার অনুযায়ী ২২০ জন বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে একজন ছাত্রী আইসিইউতে এবং কয়েকজন ছাত্রকে এনআইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।