জাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে পালালো ছাত্রলীগ

হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে পালিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান করছেন।

যদিও এর আগে, কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরতদের ভিসি ভবনে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগের হামলা ও পুলিশের গুলিতে একরকম রণক্ষেত্রে পরিণত হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

এখন ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নতুন করে এপিসি-সহ ‍পুলিশের একাধিক গাড়ি ঢুকতে দেখা গেছে।

সোমবার রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ। এসময় পেট্রোল বোমা, ইট ও কাঁচের বোতল নিক্ষেপ করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের হামলায় কয়েকজন সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের উপস্থিতিতেই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা হয়। এছাড়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ভিসির বাসভবনও ভাঙচুর করে।

তবে হামলার খবরে এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বের হয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পিছু হটে ছাত্রলীগ। পরে পুলিশ টিয়ার শেল ছুঁড়তে থাকে।

আন্দোলনকারীরা জানান, রাত সাড়ে ১১টার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে বাইরে থেকে দুই পিকআপ ভ্যান ভর্তি লোক আনে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একইসঙ্গে দেশীয় অস্ত্র মজুদ করে ছাত্রলীগ। হেলমেট ও মুখ বেধে হামলায় নামে তারা।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যার দিকে কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে জাবি ছাত্রলীগ। এসময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

এর বিচার চেয়ে রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তারা বিক্ষোভ করতে থাকেন।

এরপর রাত ১১টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। তারা পরিবহন চত্বরে জড়ো হন। এসময় কয়েকটি গাড়িতে করে আনা হয় দেশীয় অস্ত্র। এছাড়া তাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার কিছু বহিরাগতও অংশ নেন।

সংঘাত এড়াতে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, হেলমেট পরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ। তাদের কয়েকজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে।

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অস্ত্র নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনরতদের দিকে হামলা করেন। এসময় নিরাপত্তার জন্য আন্দোলনকারীরা গেট ভেঙে উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। বাইরে থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ইট-ঢিল ও কাঁচের বোতল ছোঁড়ে। তারা পেট্রল বোমাও ছুঁড়েছেন।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান দাবি করে বলেন, ‘কোটাবিরোধীরা ভিসির বাসা ঘেরাও করেছিল। ছাত্রলীগ এসে এদের সরানোর জন্য অবস্থান নেয়। পুলিশ দুই পক্ষের মাঝে অবস্থান নিয়েছিল। পরে কোটাবিরোধীরা হল থেকে এসে ভিসির বাসা অ্যাটাক করে।’