ডিবির হারুনের নেতৃত্বে পরিত্যক্ত অস্ত্র নিয়ে বিএনপি অফিসে অভিযান

ঢাকার নয়া পল্টনে মঙ্গলবার মধ্যরাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবির অভিযানটি ছিল নাটকীয় এবং পাতানো। ডিবি কর্মকর্তা  হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে চালানো অভিযানে বিএনপির কার্যালয় থেকে যে পরিত্যক্ত আগ্নেয়াস্ত্র এবং ককটেল উদ্ধার হয়েছে; সেগুলো সঙ্গে করেই তা নিয়ে গেছেন। অভিযানে অংশ নেয়া এক এডিসি দ্য মিরর এশিয়াকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

নিরাপত্তাজনিত কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এডিসি জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে একটি জরুরি বৈঠকে বসে। ডিবি ভবনের নিচতলার এ বৈঠকে ডিবির সব ডিসিদের সঙ্গে বৈঠক করেন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ।

এ সময় হারুন ডিসিদের কাছে জানতে চান, ডিসিদের কার কাছে কী কী অস্ত্র আছে? জবাবে বৈঠকে উপস্থিত এডিসি শাহেনশাহ জানান, তার কাছে তিনটি দেশীয় পরিত্যক্ত অস্ত্র আছে। আর বিভিন্ন টিমের কাছে আরো বেশ কয়েকটি অস্ত্র আছে।

হারুন তখন শাহেনশাহকে সবগুলো অস্ত্র গুছিয়ে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে নিতে বলেন। ডিসি শাহেনশাহ তার বিশ্বস্ত একজন এসিকে নিয়ে নিজের কোমরে তিনটি এবং ওই এসির কোমরে চারটি, মোট ৭টি পরিত্যক্ত অস্ত্র নেন।

আর বিএনপি অফিসে ককটেল রাখার দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবির মতিঝিল জোনের এডিসি (অ্যাডমিন) রফিককে। রফিক ককটেলগুলো নিয়ে বিএনপি অফিসে প্রবেশ করে। ১০০ ককটেল উদ্ধারের কথা বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে আরও কম ছিল বলেও জানান ওই এডিসি।

অবশ্য অভিযানের পর যে ককটেলগুলো বিস্ফোরণ করা হয়, সেগুলো ডিবির বোম্ব ডিসপোজাল টিম যন্ত্রপাতির ভেতরে নিয়েই বিএনপি অফিসের ভেতরে ঢোকে।

এ অভিযান চালানের আগে রাত ১১টার দিকে নয়া পল্টন এলাকার রাস্তার এবং আশপাশের এলাকার ভবনগুলোর অধিকাংশ বাতি বন্ধ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় মতিঝিল জোনের ডিসিকে (ক্রাইম)। আর বিএনপি অফিসের আশপাশের ভবনগুলোর ওপরে পল্টন থানা পুলিশের বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যদের রাখার নির্দেশ দেন ডিবি হারুন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হলেও অভিযান নিয়ে শুরুতেই প্রশ্ন ওঠে খোদ ডিবির টিমের সদস্যদের ভেতর থেকে। কারণ, অভিযান যে প্রক্রিয়ায় দেখানো হয়েছে তাতে অনেক দুর্বলতা রয়েছে বলে ওই এডিসি জানান।

এ অভিযানের মূল উদ্দেশ্য, চলমান আন্দোলন দমনে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা। যাতে আন্দোলনকারীরা দুর্বল হয়ে পড়ে। আর রাজনৈতিকভাবে বিএনপিও ধাক্কা খায়।