প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ চলাকালেই ঢাবি ও জাবিতে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলা 

ঢাবেতে পুলিশের হামলায় আহত একজনকে নিয়ে যাচ্ছেন সহযোদ্ধারা। ছবি: দ্য মিরর এশিয়া

সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় জাতির উদ্দেশ্য ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভাষণে তিনি দেশের উন্নয়ন ফিরিস্তি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দেশের শিক্ষাখাতে তার সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান। ঠিক তখনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের  ওপর পুলিশি হামলা চলছিলো। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ঢুকে ছাত্রীদের ওপর ব্যাপক হামলা চালায় পুলিশ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স আটকে আহত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করতে দেখা গেছে পুলিশকে। 

এদিকে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া তার ভাষণে মঙ্গলবার সারাদেশে পুলিশ ও ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত ৬ শিক্ষার্থীর বিষয়ে বলেন, ‘আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা করছি, যারা হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, এরা যে–ই হোক না কেন, তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তার এই ভাষণের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল পাড়ায় পুলিশ-বিজিবি ও র্যাটবের যৌথ অভিযান চলছিলো। অভিযানে কয়েক’শ সাধারণ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। তাদের অনেকেই গুলিবিদ্ধ। 

এদিকে টেলিভিশনে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণকে প্রত্যাখান করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা এই ভাষণকে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিচারিতা উল্লেখ করে বলেন, দেশের বৈধ কোনো প্রধানমন্ত্রী থাকলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলা ও হত্যাযঙ্গ ঘটতে পারে না। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ওই ভাষণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হলেও সঙ্কট সমাধানে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। শুধু শুধু ভাষণ দিয়ে জাতির সঙ্গে সময় নষ্ট করেছেন। এটি একেবারেই নিরর্থক। তিনি সঙ্কট জিইয়ে রাখার কৌশল নিয়েছেন বলেও অনেকে মনে করেন। 

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক দ্য মিরর এশিয়াকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই সঙ্ঘাত উস্কে দিয়েছেন। তিনি তার পোষা বাহিনী ছাত্রলীগ ও পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে দেশের ৬ টি মেধাবী তাজা প্রাণ কেড়ে নিয়েছেন। আমরা আমাদের যৌক্তিক অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্ন্ ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। আগামীকাল সারাদেশে সম্পূর্ণ শাট ডাউন পালন করা হবে।