কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে গুজব ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ

কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাস্তায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

চলমান কোটা বিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভুল বার্তা দিতে কাজ করছে আওয়ামী লীগের সাইবার টিম। তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ এ আরাফাত এবং প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলকের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই টিমের অধীনে কয়েকশ ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ থেকে নানা রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোদের মধ্যে অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট নিঝুম মজুমদারসহ আওয়ামী ঘরানার সুশীল ও সাংবাদিকরাও রয়েছেন। 

জানা গেছে, সোমবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগীয় শহরগুলোয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যাপক শোডাউনের পর এই আন্দোলনকে বিতর্কিত করার কৌশল নেয় আওয়ামী লীগ। তারা ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজ থেকে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে থাকে। এইসব ফেসবুক পেজ ও গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের হাতে।

সূত্র জানিয়েছে, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামরুজ্জামান সুইটের নেতৃত্বে বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাইবার টিমটি পরিচালিত হচ্ছে। তিনি শাবির ২০০৩-২০০৪ ব্যাচের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

এর মধ্যে ‘কোটা পুনর্বহাল চাই’ প্রায় ৫ লাখ সদস্যের এই গ্রুপটিও ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রণে। সেখান থেকে একের পর এক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একাধিক ফেসবুক পেজ রয়েছে। যাদের মধ্যে কোনো কোনো এডমিন এবং কোনো কোনো পেজের পুরো নিয়ন্ত্রণ ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টদের। এইসব পেজে কোটা আন্দোলনের বিপক্ষে নানা ধরনের তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর কাজে যুক্ত রয়েছেন সাংবাদিকদের বিশাল একটি গ্রুপও। এদের মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক ও বর্তমান অনেক নেতাকে দেখা গেছে।

বুধবার রাত থেকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে তারা। পিস্তল হাতে একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর আংশিক ছবি দিয়ে তারা লিখছে, ‘পিস্তলধারী ছেলেটি শিবিরের ক্যাডার’।

তবে তাদের এইসব পোস্টের নিচে কমেন্ট বক্সে অনেকেই পুরো ছবিটি জুড়ে দিয়েছেন। সেখানে তারা লিখেছেন, বুধবার দুপুরের পর শাবির শাহপরান হলের ছাত্রলীগ সভাপতি খলিলুর রহমান খলিলের কক্ষসহ অন্যান্য কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সেগুলো হল গেটে টেবিলে সাজিয়ে রাখার সময় ওই শিক্ষার্থী পিস্তলটি কাউকে দেখাচ্ছিলেন। এসময় প্রক্টর বডির সদস্যসহ বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ওই পোস্টের নিচে এমন আরো অনেকেই প্রকৃত সত্য তুলে ধরলেও পোস্টকারী কেউই কোনো মন্তব্যের জবাব দেননি। তবে সকালে এদের অনেকেই পোস্টটি ডিলিট করেছেন।