বাংলাদেশ কার্যত বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন

কোটা সংস্কারের দাবীতে বৃহস্পতিবার দিনভর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর সরকার টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা বিশেষ করে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতের গভীর রাতে ইন্টারনেটের ব্রডব্যান্ড সেবা ফিরে আসলেও তা ছিল অত্যন্ত ধীর গতির। এ কারণে বাংলাদেশের ভিতরে ছাড়াও বহির্বিশ্ব থেকে কেউই ইন্টারনেট অ্যাপ ব্যবহার করে ভয়েস কল বা ভিডিও কলে যোগযোগ করতে পারেননি। এমনকি সরাসরি ফোনে কল করে বাংলাদেশের নম্বরগুলোতে অধিকাংশ সময় প্রবেশ করা যাচ্ছিল না। সংযোগ পাওয়া গেলেও বেশিক্ষণ কথা বলতে পারেননি।  এ কারণে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ভোগান্তির মধ্যে নিপতিত হন। এ সময় তারা উদ্বেগ ও আতংকের মধ্যে সময় অতিবাহিত করেন। 

পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলায় ৪১ জন শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর অনেকেই দেশে ফোন করে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে খোঁজ খবর শুরু করেন। কিন্তু কেউই যোগাযোগ করতে পারেনি। 

কয়েকদিন ধরেই ঢাকা ও এর আশেপাশের অঞ্চলে মোবাইল ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। কোথাও কোথাও শত চেষ্টায়ও ব্যবহারকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে পারছেন না। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট স্বাভাবিকই আছে। গতকাল রাত থেকে ঢাকা ও এর উপশহরগুলো ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে। 

মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অভিযোগ মোবাইল ডাটার মাধ্যমে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হতে বেগ পেতে হচ্ছে। কখনো কখনো মোবাইল ডেটা ডিসকানেক্টেড দেখাচ্ছে। ফলে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লগইন করা যাচ্ছে না। ফোনে ইন্টারনেট সংযুক্ত দেখালেও প্রকৃতপক্ষে কাজ করছে না। 

ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের এই সমস্যাটা বেশি ঢাকা ও এর আশেপাশের উপশহর যেমন নারায়ণগঞ্জ, সাভার, গাজীপুরে বেশি। দেশের অন্যান্য জেলাগুলোও কমবেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। 

দেশের বেশিরভাগ মানুষ মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। হঠাৎ মোবাইল ফোনে ইন্টারনটে সেবা বিঘ্ন হওয়ার কারণ জানতে শীর্ষস্থানীয় দুই অপারেটর গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা সঠিক কারণ জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) জুন মাসের প্রতিবেন অনুযায়ী দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৬২ লাখ ১০ হাজার। তাদের মধ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন ১১ কোটি ৫০ লাখ ৭০ হাজার এবং আইএসপি ও পিএসটিএন মিলিয়ে ১ কোটি ১১ লাখ ৪০ হাজার।