মধ্যরাতে ধরে নিয়ে আলোচনার নাটক করছে সরকার: অভিযোগ শিক্ষার্থীদের

মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিনজনকে নিয়ে সরকার আলোচনার নাটক করেছে বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে। শুক্রবার মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের তিনজনকে নেতা হিসাবে উল্লেখ করে সরকারের তিনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে বিবিসি বাংলা জানায়।

বিবিসি বাংলার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং তানভীর আহমেদ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আলোচনায় বসেন। সেখান থেকে বেরিয়ে তারা বলেন সরকারের কাছে ৮ দফা উত্থাপন করেছে।

এই সংবাদ প্রচারের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়। কারণ শুক্রবার সন্ধ্যায়ই আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, তারা কারফিউ মানবেন না। সর্বাত্মাক শাটডাউন চলবে। 

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন এদের একজনকে গোয়েন্দা দিয়ে ধরে নিয়ে গেছে। তবে এদের মধ্যে দুইজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাই তাদের আলোচনায় অংশ নেওয়াকে অন্যান্যরা নাটক হিসাবে দেখছেন। 

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সারজিস আলম ও তানভীর আলম ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর মধ্যে সারজিস আলম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে  অমর একুশে হলে ছাত্রলীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জেলার হওয়ায় রাজনীতিতে তিনি সুবিধাও পেয়েছেন। পরে সংগঠনের সমালোচনা করায় পরে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আগাতে পারেনি। 

তাদের মতে সারজিস আলমকে পরিকল্পিত ভাবেই আলোচনায় নেওয়ার জন্য নেতা হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর নাহিদ হোসেন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতেন। কিন্তু বেশ কিছু গণমাধ্যম সারজিস ও তানভীরকে সামনে নিয়ে আসার কাজ শুরু করে। ওই গণামধ্যমগুলো সারজিসকে বিশেষ করে পরিচিত করে বিভিন্ন সময় কার মন্তব্য নিয়ে। এরই ধারাবাহিককতায় শুক্রবার রাতে তিনি সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন। 

এদের সম্পর্কে তারেক আহমেদ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, হাসনাতকে হয়ত ধরে নিয়ে গেছে। সে কোন কথাই বলেনি। ওরে আমি চিনি। কেউ ভুল বুঝবেন না। বাকি দুইটা ছাত্রলীগের। তাই বিভ্রান্ত হবেন না। এসব কমন নাটক ।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন প্রাইভেট ইউনভির্সিটি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ তাদের পেইজে এক পোস্টে জানিয়েছে, এই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক বলে কেউ নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোথায় এমন কিছু থাকলে ভেঙে দিতে হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ ধরনের কমিটির আওতামুক্ত। আমাদের সমন্বয়ক হচ্ছে এই আন্দোলনের শহীদেরা। তাদের দেখানো পথেই এই আন্দোলন পরিচালিত হবে।