জনগণের মুখোমুখি হতে চায় না সেনাবাহিনী

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাথে সাক্ষাত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

দেশের সহিংসতা বন্ধে প্রয়োজনে আরও সেনা সদস্য মোতায়েন করা হবে। কিন্তু জনগণের মুখোমুখি সেনা সদস্যদের দাঁড় করিয়ে বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে রাজি নন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

নিজের বাহিনীর সদস্যদের মনোভাবসহ দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে সেনাপ্রধান এমন কথাই বলেছেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গ ভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের ৪৫ মিনিটের সাক্ষাৎকারে সময় প্রতিরক্ষা সচিব উপস্থিত ছিলেন। তাদের বিভিন্ন আলোচনায় গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল— স্তামবুল কেন্দ্রিক একটা সংগঠন ও আলজাজিরার নিউজে প্রচার হওয়া ইউএন মিশনের ট্যাংক ব্যবহার করার বিষয়টি।

আলজাজিরার সংবাদের ভিত্তিতে পিস কিপিং বন্ধ হবার আশঙ্কায় সেনা সদস্যদের মধ্যে আতঙ্ক ও উদ্বেগ জমেছে। এমতাবস্থায় সেনা সদস্যদের জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলেও মত দেন সেনা প্রধান।

সেনাবাহিনীর প্রধান দেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা জরুরি উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করে বলেন, আপনি প্রধানমন্ত্রীকে বুঝিয়ে বলুন আমরা কি করব। যে সহিংসতা শুরু হয়েছে তা রাজনৈতিকভাবে সমাধান করলে সেনাবাহিনীর জন্য সুবিধা হয়। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী সংলাপের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান খুঁজে বের করবে। তা না করে, যদি সেনা সদস্যদের দিয়ে ক্ষুব্ধ জনগণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সংহিতার বেড়ে যায়, তাহলে জাতিসংঘের কাছে নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।

একই সঙ্গে পিস কিপিং যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেনা সদস্যদের মধ্যে ভয়াবহ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে যেতে পারে। ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নিতিবাচক আলোচনা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে কিছু দুষ্ট চক্র। তাই জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন না করে চলমান রাজনৈতিক সংকট ও সহিংস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করার অনুরোধও জানান সেনাপ্রধান।

এদিকে চলমান সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে নিহত ও আহতদের সংখ্যা এবং গ্রেপ্তার বাণিজ্যের খবরে সেনা কর্মকর্তাদের তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সেনা সদর দপ্তরে প্রতিদিন কেউ না কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ সেনা মোতায়েনের পরের দিন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টার আচরণ ও তর্ক বিতর্কের জের ধরে একজন কর্নেল ও পদস্থ কর্মকর্তারা ( ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) রাগ করে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করতে চাকরি থেকে অব্যাহতি পত্র জমা দিয়েছেন সেনা প্রধানের কাছে।