হত্যাযজ্ঞ ও নির্মমতাকে আড়াল করতেই কি প্রধানমন্ত্রীর কান্নার নাটক?

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর-১০ নম্বরে মেট্টোরেল স্টেশন পরিদর্শন করছে। ছবি: বাসস

 

চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশ ও সরকার সমর্থকদের হামলার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশন। আজ বৃহস্পতিবার সেই মেট্রো স্টেশন পরিদর্শনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর কান্নারত একটি ছবি প্রকাশ করা হয় গণমাধ্যমে। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

মিরপুর এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হত্যাযজ্ঞ ও নির্মমতাকে আড়াল করতেই মেট্রোরেল নিয়ে নাটক করছে সরকার। তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও সরকারের পক্ষ থেকে বিশাল ক্ষতি হয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছে।

এতে মেট্রোরেলের সুবিধাভোগীদের শিক্ষার্থীদের বিপরীতে দাড় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়েছে। সরকারের এই প্রচারণায় কান না দিয়ে সাধারণ মানুষ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে; আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করছে।

গত শুক্রবার মিরপুর-১০ নম্বর ও কাজীপাড়া স্টেশনে হামলা করা হয়। বিকেল ৪টার দিকে পুলিশ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। যুবলীগের সন্ত্রাসীরা মিরপুর-১০ নম্বরে আল হেলাল হাসপাতালের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র অবস্থায় হামলা করে। এসময় মেট্রোরেল স্টেশনে অবস্থান নিয়ে পুলিশও শিক্ষার্থীদের প্রতি গুলিবর্ষণ করতে শুরু করে। এ সময় কাজীপাড়া স্টেশন থেকে ১০ নম্বর পর্যন্ত এলাকা শিক্ষার্থীদের দখলে চলে যায়।

শিক্ষার্থীদের ধাওয়ার মুখে যুবলীগ ১০ নম্বর মেট্রোরেলের ভেতরে ঢুকে পুলিশের সঙ্গে মিশে গুলি করতে থাকে। কাজীপাড়া স্টেশন থেকেও শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এক পর্যায়ে হেলিকপ্টার থেকেও গুলি করা হয়।

আকাশ ও স্থলে ত্রিমুখী হামলার মুখে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা মেট্রোরেলের ভেতরে অবস্থান নেওয়া পুলিশ ও যুবলীগকে হটিয়ে দেয়। এ সময় কিছুটা ভাঙচুর চালানো হয়।

দিনভর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করলেও মেট্রোরেলে হামলা বা ভাঙচুর করেনি। মূলত মেট্রোরেল স্টেশনের ভেতরে অবস্থান নিয়ে পুলিশ ও যুবলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করলে শিক্ষার্থীরা পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে মেট্রোরেল পরিদর্শনে গিয়ে কান্নারত প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেখে জনসাধারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসি-ঠাট্টা করছেন। এসময় তারা প্রশ্ন করেন, অগণিত শিক্ষার্থী ও জনতা হত্যা করে তিনি মেট্রোরেলের জন্য কাঁদছেন।