লড়াই চলবে: সারজিস আলম

কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কাউকে  গ্রেফতার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না ৷ আপনারা কথা রাখেননি। ডিবি হেফাজত থেকে মুক্ত হয়ে বৈষম্য নিরসন ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে এ কথা বলেন।  

সারজিসের পুরো পোস্ট নিচে দেওয়া হলো:

আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপর আঘাত করেছেন ৷ সারাদেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের উপর লাঠিচার্জ করেছেন ৷ যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন ৷ আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবা'কে হুমকি দিয়েছেন ! মাশরুর তার উদাহরণ ৷

যারা একটিবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারেনা, গ্রেফতারের ভয়ে থাকে ৷ এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি ৷ এমন তো হওয়া উচিৎ ছিল না !

কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার জন্য গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেন ৷ সাথে আছে আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুর সহ আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী ৷

রিক্সা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন ৷ আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিঠিয়েছেন ৷ কি ভাবছেন ? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে ?

৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কিভাবে আটকে রাখবেন ? দূর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কিভাবে নিবৃত করবেন ?

পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি ৷ এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের উপর নয়, পুলিশের উপর নয় ৷ এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার উপর ৷ যে পোশাকটাকে ব্যবহার করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গনে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার উপর ৷ ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নিব ৷

পরিশেষে এটুকু বলতে চাই, এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবেলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই ৷ যতদিন না এ বাংলাদেশ  আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে ততদিন এ লড়াই চলবে ৷