সোনার ছেলেদের হাতে কে নিরাপদ?

মাথায় রামদার কোপ, শরীরে লাঠির আঘাত। আমার সোনার দেশের সোনার ছেলেদের হাতে কে নিরাপদ? ফেসবুকে প্রশ্নটি করেছেন দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডের সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম। রবিরার ধানমন্ডিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের হাতে মারধরের শিকার হন।

বিষয়টির বিস্তারিত তিনি ফেসবুকে এক পোস্টে তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, রবিবার দুপুর ১২টার দিকে ধানমন্ডি-২৭ রাপা প্লাজার সামনে আমারই সহকর্মী নাঈমুল ইসলাম মিরাজকে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের হেলমেট বাহিনী মারধর করলে তাকে বাঁচাতে যাই।

মিরাজকে রক্ষা করতে পারলেও ওরা আমার ওপর বন্য হায়নার মতো এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। রামদা, লাঠি দিয়ে একের পর এক আঘাত করে আমাকে। এসময় ডিবিসি নিউজের শায়ন বিকাশ দাদা আমাকে আগলে ধরে রক্ষা করার চেষ্টা করেন। সাথে আরও কয়েকজন সাংবাদিক সহকর্মী ছিলেন।

কিন্তু ওখান থেকে ফিরে যেতে গেলে আবার ৮-১০ জনের একটি সশস্ত্র বাহিনী আমাকে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি মাটিতে লুটিয়ে যায়৷ আমার মাথায় বেশ কয়েকটি আঘাত করে তারা। আমার পকেট থেকে মোবাইল-মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে কয়েকজন। ওদের মধ্য থেকে কয়েকজন আমাকে বলছিল, “সবার কাছে মেশিন আছে, দ্রুত পালা নয়তো এখানেই ফেলে দেব”।

ওদের মধ্য থেকে একজন আমার মাথায় রামদা দিয়ে কোপ দেয়। মুহূর্তের মধ্যে চারিদিক অন্ধকার দেখতে পাই আমি। এসময় বিকাশ দাদা এগিয়ে এসে আমায় আবার আগলে মাথা কাপড় দিয়ে বেঁধে রিকশায় তুলে দেন। কিন্তু দাদাকে আবার বাঁধা দেয় জানোয়ারগুলো। ফলে একাই রিকশা নিয়ে ইনসাফ বারাকা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিই।

তিনি জানান, আমি এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। মাথায় ৫টি সেলাই লাগে, ডান হাতে ফ্র্যাকচারের কারণে হাত ওপরে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এখন বাসায় রেস্টে আছি। কিন্তু মানসিকভাবে ভালো নেই দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। কী হবে আমার সোনার দেশের?

জাহিদকে মারধর করা ছাড়াও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার, বেসরকারি টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজে হামলা করেছে বলে জানা গেছে।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক ছাত্রনেতা জানান, বাংলা মোটরে আমাদের অবস্থান ছিল। এখানে যারা ছিলেন তারা নিরস্ত্র ছিলেন। বাংলা মোটরের কয়েকটি বিল্ডিংয়ের ছাদে অবস্থান নেওয়া পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় অবস্থান নেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর গুলি করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। শুধু তাই নয় কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেটে আমাদের কেউ ছিলেন না। অথচ সেখানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর দায়-দায়িত্ব আমাদের নয়। বিশেষ করে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে হামলা সরকারের পূর্ব পরিকল্পিত। কারণ গণমাধ্যম কোটা আন্দোলনকারীদের পক্ষে সংবাদ প্রকাশ করছে।