খুনির কোনো জিনিস নিব না

শেখ হাসিনা সম্ভবত দুপুরের দিকে গণভবন ছেড়ে চলে যান। দুপুর ২.২৫-২.৩০ এর দিকে গণভনের সামনে মোতায়েন করা সেনা সদস্যরা চলে যায়। সেনা সদস্যরা চলে যাওয়ার সময় গণভবনের চারপাশে উপস্থিত জনতার প্রতি মুষ্টিবদ্ধ হাত নাড়িয়ে সংহতি প্রকাশ করে। এরপরই গণভবন খুলে দেওয়া হয় জনতার জন্য।

সাভার বা গাবতলি থেকে মিছিল নিয়ে আসা বিক্ষুব্ধ জনতা প্রথমে গণভবনে ঢুকে যায় বিনা বাধায়। বিক্ষুব্ধ জনতা ভুয়া ভুয়া বলে গণভবনে প্রবেশ করে।

আসাদ গেটের একটি ভবনের সামনে সেনা সদস্যরা অবস্থান নিয়েছিল। এ সময় সেনাদের পাশের ভবনে মানুষজনদের উদ্দেশ্য করে বিজয় চিহ্ন প্রদর্শন করতে দেখা যায়।

গণভবনে প্রবেশ করেই বিক্ষুব্ধ জনতা বিভিন্ন জিনিস নিয়ে যেতে শুরু করে। আসবাব পত্র, নানা তৈজসপত্র, এসি, কমোডও নিয়ে গেছে। তবে সোমবার গণভবনে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ছিল না। সকাল থেকে কোনো খাবারও রান্না করা হয়নি। রবিবার রাতে ফ্রাইড রাইস রান্না করা হয়েছিল। ডাইনিং টেবিলে কিছু ফ্রাইড রাইস পড়ে ছিল।

বিক্ষুব্ধ মানুষজন শেখ হাসিনার আচারের বয়াম থেকে খেতে শুরু করে। তবে পুরো রান্নাঘর ছিল পরিষ্কার। সেখানে সোমবার রান্নার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার বিষয়টি আঁচ করতে পেরেই সম্ভবত কোনো রান্না করা হয়নি।

এছাড়া সুইমিং পুলে কোনো পানি ছিল না। শিশুদের কক্ষ ছিল বেশ পরিপাটি করে সাজানো।

সূত্র জানিয়েছে, মোট চারটি সুটকেস নিয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা গণভবন থেকে চলে যান। তবে তিনি গণভবনে বেশ কিছু সংবেদনশীল তথ্য সংবলিত কাগজপত্র ফেলেই চলে যান। এ ছাড়া শেখ হাসিনার বিছানার বেড সাইড টেবিলে মুজিব কমিকস ছিল।

গণ ভবনের সামনে লোকজন একে অপরকে ঈদ মোবারক বলতে থাকে। বিভিন্ন মানুষজন যখন গণভবন থেকে নানা জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছিল তখন এক মহিলা ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি কোনো কিছু নিচ্ছিলেন না। কিছু নিচ্ছেন না কেন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি উত্তর দেন, খুনির কোনো জিনিস নিব না।