ছাত্র হত্যাকারী চট্রগ্রামের সন্ত্রাসী নুরুল আজিম রনি গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির সদস্য নুরুল আজিম রনি মধ্যরাতে দেশ ছেড়ে পালানোর সময় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে ঢাকা বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে।

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে দেওয়া এক পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সহ-সমন্বয়ক মোসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ লিখেন, ‘চট্টগ্রামের ত্রাস সৃষ্টিকারী আওয়ামী সন্ত্রাসী নুরুল আজিম রনি এই মুহূর্তে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আশেপাশে যারা আছে তারা এই সন্ত্রাসীকে ধরার ব্যবস্থা করুন।’

ওই পোস্টে তিনি দাবি করেন, ‘চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া নারকীয় হামলা ও সবচেয়ে বেশি গুলি চালানোর মূল নেপথ্যের কারিগর এই রনি। তাকে যেভাবেই পারেন ধরার চেষ্টা করুন। এই মুহূর্তে সে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে অবস্থান করছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রামে বিক্ষোভরত ছাত্র-জনতার ওপরে হামলার ঘটনায় তার নাম আসে। পরে ঢাকার হাসপাতালে আহত কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মীকে দেখতে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার সঙ্গে কথা বলেন। বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সহিংসতায় জড়িত এ দুজনই সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী।

গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে সমাবেশ ডাকে শিক্ষার্থীরা। একই দিনে একই স্থানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আজিম রনিও।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন সকাল থেকে ষোলশহর রেলস্টেশনে দলবল এবং অস্ত্রধারীদের নিয়ে অবস্থান নেন রনি। এক পর্যায়ে বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবর ও জাফর নামে আরেক অস্ত্রধারী সেখানে যান। সংঘাত এড়াতে শিক্ষার্থীরা পরে মুরাদপুর এলাকায় সমাবেশ করেন। এরপর রনি ও বাবর একদল অস্ত্রধারী নিয়ে ষোলশহর থেকে মুরাদপুর গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ লিপ্ত হন। ওই সময় অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করেন যুবলীগের জাফর, ডাকাত ফিরোজ, মিঠু ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দেলোয়ার।

বাবরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাফর প্রাইভেটকার নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র বিলি করেন। ওইদিনের সংঘর্ষে প্রাণ হারান— চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র ওয়াসিম আকরাম, মুরাদপুরের ফার্নিচার দোকানের কর্মী মোহাম্মদ ফারুক ও কলেজছাত্র ফয়সাল আহমদ শান্ত।