বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ নিয়ে বিপাকে শ.ম রেজাউল ও তার ভাইয়েরা

শ.ম রেজাউল করিম

পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শ.ম রেজাউল করিম ও তার ভাইয়েরা বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

২০১৮ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচনে প্রথম এমপি হয়ে প্রথমে গণপূর্ত ও পরে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী হন রেজাউল। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাননি। টাকা কামিয়েছেন দু’হাত ভরে। কেবল তিনি একাই নন, তার তিন ভাই নজরুল ইসলাম বাবুল, নওশের বাদশা শামীম ও নূরে আলম সিদ্দিকী শাহীন কামিয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। নামে বেনামে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর রেজাউলের নিজ এলাকা নাজিরপুরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রেজাউল ও তার ভাই শাহীনের নাজিরপুরের বাসভবনের ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। এরপর তার গ্রামের বাড়ি তারাবুনিয়াতেও হামলা চালানো হয়। এসময় তার বড় ভাই উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম বাবুল পালিয়ে যান।

শ.ম রেজাউলের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, গত সোমবার দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে রেজাউল ও তার ভাই শাহীন রাজধানীর বসুন্ধরার নিজ বাসায় পালিয়ে থাকেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচার মেহরাবা প্লাজার অফিস থেকে তিন বস্তা নগদ টাকা সরিয়ে নেন রেজাউলের ছোটো ভাই ও নাজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী শাহীন।

এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, অফিস থেকে টাকা সরানোর পর বুধবার রাতেই সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান শাহীন। তবে সাবেক সংসদ সদস্য শ.ম রেজাউল করিম বর্তমানে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার নিজের বাড়িতে আত্মগোপন করে আছেন।

প্রসঙ্গত, মেহরাবা প্লাজায় অ্যাডভোকেট শ.ম রেজাউল করিমের ব্যক্তিগত চেম্বার ও তার মালিকানাধীন একটি পত্রিকা অফিস রয়েছে। শাহীন ওই পত্রিকাটির সম্পাদক।

অফিসের একটি সূত্র জানায়, বুধবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা থেকে প্রাইভেট কার যোগে শাহীন মেহরাবা প্লাজায় আসেন। এসময় অফিসের বেশ কয়েকটি ট্রাঙ্ক থেকে মোট তিন বস্তা নগদ টাকা বের করে সেগুলো গাড়িতে করে নিয়ে যান। এসময় অফিসের নিরাপত্তা কর্মীরা বাঁধা দিতে চাইলেও পরে তারা পিছিয়ে আসে।

এদিকে রেজাউলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম বাবুল এলাকায় ২০১৮ সাল থেকে রাম রাজত্ব কায়েম করেন। রেজাউল ৫ বছরে মন্ত্রী থাকাকালে তদবির বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম করে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। চাকরি দেবার নাম করে এলাকার অসংখ্য মানুষের কাছ থেকে নগদ টাকা নেন তিনি। কিন্তু সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এলাকার অসংখ্য মানুষ বাবুলের গ্রামের বাড়িতে জড়ো হন। কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানিয়েছে, সাবেক এমপি রেজাউলের মেয়ে বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার মাধ্যমে গত ৫ বছরে বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন তিনি। এ ছাড়া বর্তমানে তার গ্রামের বাড়ি ও ঢাকার বিভিন্ন বাড়িতে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ রয়েছে। যেগুলো নিয়ে রেজাউল ও তার ভাইয়েরা বিপাকে রয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম ও তার ভাই নূরে আলম শাহীনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইলে তাদের ব্যবহৃত ফোনগুলি বন্ধ পাওয়া যায়।