গুরুতর অভিযোগ থাকায় আটকে যেতে পারে সুপ্রদীপ চাকমার শপথ

দেশের অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে নাম প্রস্তাব এসেছে সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমার। তবে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ থাকায় শপথ গ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, ২০০৫ সাল থেকে সুপ্রদীপ চাকমা তুরস্ক ও ভিয়েতনামে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মে জড়ান। এর জেরে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মাহাবুবুল আলম বাদী হয়ে সুপ্রদীপ চাকমার বিরুদ্ধে রমনা থানায় দুটি মামলা দায়ের করেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, মামলার পর দীর্ঘ অনুসন্ধানে সুপ্রদীপ চাকমার বিরুদ্ধে অনিয়ম এবং অর্থ আত্মসাতের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়।

মামলার বিবরণ এবং অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, ভিয়েতনামে যাওয়ার আগে তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘মিনিস্টার’ হিসেবে দায়িত্বরত অবস্থায় এ রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার সুপ্রদীপ চাকমা (বর্তমানে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত) এবং তুরস্ক দূতাবাসের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মশিউর রহমান উভয়ের যোগসাজশেই তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৭ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার (১২ লাখ ৩০৬ টাকা), কল্যাণ তহবিলের পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার (তিন লাখ ১৮ হাজার ৯২৫ টাকা), তিন হাজার ৭৬৪ দশমিক ৩৯ তুর্কি লিরাসহ (দুই লাখ পাঁচ হাজার ২৩৫ টাকা) মোট ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৭৬ টাকা আত্মসাৎ করেন।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিল ভাউচার দেখাতে পারেননি সুপ্রদীপ চাকমা। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে একটি মামলা ছাড়াও সুপ্রদীপ চাকমার বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা দায়ের করে দুদক। গাড়ি আনার কথা উল্লেখ করে তিনি দুই লাখ ১৯ হাজার ২০০ টাকা উত্তোলন করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে সুপ্রদীপ চাকমাকে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০০৭ সালে এ কূটনৈতিককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তাকে ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও নিয়োগ দেয়া হয়।

এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ডাক পাওয়া সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমাকে রাখার প্রতিবাদ জানিয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সমাজের নাগরিকরা। একইসঙ্গে তাকে আওয়ামী লীগ সরকারের ‘দালাল’ আখ্যা দিয়ে নতুন সরকারের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছেন তারা।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বৈঠক চলাকালীন হঠাৎ করেই ‘ক্ষুব্ধ আদিবাসী সমাজ’ ব্যানারে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে তারা দাঁড়িয়ে যান। এ সময় তারা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবি জানানোর কথা জানান।