জেনারেল জিয়াউলের বিতর্কিত সংস্থা এনটিএমসি বিলুপ্তির দাবি

জেনারেল জিয়াউলের বিতর্কিত সংস্থা এনটিএমসি বিলুপ্তির দাবি

নাগরিকের মুঠোফোনে আড়িপাতা ও ডিভাইস নজরদারিতে রাখার বহু অভিযোগ উঠা বিতর্কিত টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি) বিলুপ্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন। এ সংস্থাটির বিরুদ্ধে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেলে আড়ি পাতা ও ওয়েবসাইট ব্লক করার অভিযোগ রয়েছে।

শনিবার (১৭ আগস্ট) সংগঠনে তথ্য ও দফতর সম্পাদক শেখ ফরিদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।

এতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এনটিএমসি কার্যক্রম সংবিধান পরিপন্থী। সংবিধানের ৪৩ (খ) অনুচ্ছেদে চিঠিপত্র ও যোগাযোগের সকল মাধ্যমের গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। অথচ ২০১৩ সালে এই সংস্থাটি গঠন করা হয় বিতর্কিত বরখাস্তকৃত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের পরামর্শে। মূলত নাগরিকের যোগাযোগে আড়িপাতা এবং নজরদারিতে রাখার জন্য সেই সাথে ফোনালাপ রেকর্ড, ইন্টারনেট ও বিভিন্ন অ্যাপে আড়িপাতা ছাড়া অন্য কোনও কাজই করেনি এই সংস্থাটি। সংস্থাটি মোবাইল অপারেটরদেরও বিভিন্ন ধরনের মেসেজ গ্রাহকদের মাঝে প্রদান করতে বাধ্য করতো। ফোনালাপ রেকর্ড এমনকি ভিডিও কলিং রেকর্ড করে অনেক সম্ভ্রান্ত নাগরিককে হেনস্তা করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।

নানা অভিযোগ করে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, বিক্যাল মাউন্টেন ডাটা ইন্টার সেপ্টরের মতো ভয়ানক যন্ত্র ব্যবহার করে আসছিল এই সংস্থাটি। এমনকি বাংলাদেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক থেকে ছিন্ন বিতর্কিত ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এর কাছ থেকে পেগাসাস স্পাই ওয়ার ক্রয় করা হয়েছিল বলে দেশ ও বিদেশের গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিকভাবেও বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছিল। যদিও সরকার এ ধরনের যন্ত্রপাতি ক্রয়ের কথা অস্বীকার করেছিল। 

পেগাসাস স্পাই ওয়ার অ্যাপটি গ্রাহকের কাছে ম্যালওয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হতো সংস্থার পক্ষ থেকে। অনেক গ্রাহক না বুঝেই ইন্সটল করলে সাথে সাথে গ্রাহকের ব্যবহৃত ডিভাইসটি সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলে আসতো। এই ভাবে নাগরিকদের সকল কার্যক্রমের তথ্য এই বিতর্কিত সংস্থাটি হাতিয়ে নিত বলে অভিযোগ মোবাইল গ্রাহকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটির।

এ ধরনের কার্যক্রম মানবাধিকার লঙ্ঘন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলে বলা হয়, দেশের সংবিধানকে সমুন্নত রেখে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে এ ধরনের সংস্থা বিলুপ্তি করতে হবে।  গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য ও সুরক্ষার স্বার্থে এই সংস্থার বিলুপ্তি অন্তবর্তী সরকারের কাছে দাবি করছি।

এ সময় এ দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করার কথাও জানিয়েছে তারা।