চুক্তিতে থাকলেও ভারত পানি ছাড়ার আগে জানায়নি: রিজওয়ানা

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পানি ছাড়ার আগে বাংলাদেশকে জানানোর বিষয়টি ভারত প্রতিপালন করেনি।’

তিনি বলেন, ‘উজানের দেশে যদি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয় এবং পানি ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে ভাটির দেশকে আগে থেকেই জানানোর প্রয়োজন হয়। যাতে করে ভাটির দেশের লোকজন নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে পারে এবং লোকজনকে সরানো যায়। কিন্তু এবার এই জানানোর বিষয়টি ভারত প্রতিপালন করেনি। ভারতের সাথে আমাদের চুক্তিতেও এমনটি বলা হয়েছে।’

আজ শুক্রবার হবিগঞ্জ সদর উপজেলার মশাজান খোয়াই নদীর ব্রীজ এলাকায় জেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এবারের বিষয় থেকে শিক্ষা নিয়ে যত অভিন্ন নদী রয়েছে সেগুলোর সবকয়টার ব্যাপারেই পানি ছেড়ে দেয়ার প্রশ্ন দেখা দিলে যাতে আগাম সতর্কতা বাংলাদেশকে জানানো হয়, সেই বার্তা ভারতে দেয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতীয় দূতাবাসকে বিষয়টি জানিয়েছেন। ভবিষ্যতে যাতে এমন অবস্থা না হয় তার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক সমস্যা আসবেই, কিন্তু এটি না জানানোর কারণে যাতে মনুষ্যসৃষ্ট সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশকে বন্যামুক্ত রাখতে নদীকে নদীর মতো রাখা উচিত। বাঁধগুলো সুরক্ষিত রাখা উচিত।’

উপদেষ্টা ওই এলাকার গোপায়া ও রাঙ্গারগাও গ্রামের পাশে খোয়াই নদীর বাঁধ পায়ে হেটে দেখেন। এ সময় শত শত লোক তাকে বালু ও মাটি উত্তোলনের কারণে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি অবগত করেন। তিনি সবার কথা মনোযোগ সহকারে শোনেন।

এর আগে, তিনি জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক প্রশান্ত সোম মহান, পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন, সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজির ও মেজর ইশরাত। উপদেষ্টা বন্যার বিষয়ে হবিগঞ্জের অবস্থা অবগত হন।

এ সময় খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তেফাজ্জল সোহেল ও বাপার সভাপতি ইকরামুল ওয়াদুদ হবিগঞ্জ জেলার পরিবেশের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে একটি চিঠি দেন। সেখানে দাবি করা হয়- জরুরি ভিত্তিতে খোয়াই নদী খনন, খোয়াই নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালি উত্তোলন বন্ধ, পুরাতন খোয়াই নদী দখলমুক্ত করণ, পুকুর ও জলাশয় দখলমুক্ত করণ এবং জেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা বন্ধ করা। উপদেষ্টা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তার পৈত্রিক গ্রাম চুনারুঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের নরপতি হাবিলিতে উপস্থিত হয়ে পিতা সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ মহিবুল হাসানের কবর জিয়ারত করেন। পরবর্তীতে মুড়ারবন্দ সিপাহসালার সৈয়দ নাসির উদ্দীনের মাজার জিয়ারত করেন তিনি।