মৃত্যু বেড়ে ১৫, ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সাড়ে ৪৮ লাখ

মৃত্যু বেড়ে ১৫, ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সাড়ে ৪৮ লাখ

ফেনী-নোয়াখালীসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কয়েকটি জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির নতুন করে অবনতি না হলেও দুর্ভোগ বেড়েছে সাধারণ মানুষের। বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। এখন পর্যন্ত ১১টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৪৮ লাখ মানুষ। এ মুহূর্তে ১১ জেলায় মোট নয় লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৯ পরিবার পানিবন্দি।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

চলমান বন্যায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ফেনী জেলায়। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলা বন্যার কবলে পড়েছে।

তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, জেলার হিসাব ছাড়াও বন্যা আক্রান্ত উপজেলার সংখ্যা ৭৭টি। এসব উপজেলা প্লাবিত/ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে ইউনিয়ন/পৌরসভা ৫৮৯টি।

প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, ১১ জেলায় মোট ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৯ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৯ জন। মারা গেছেন ১৫ জন‌, যার মধ্যে পুরুষ ১৩ জন এবং নারী ২ জন। মারা যাওয়ার মধ্যে কুমিল্লায় ৪, চট্টগ্রামে ৪, ফেনীতে ১, নোয়াখালীতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ এবং কক্সবাজারে ৩ জন রয়েছেন।

বার্তায় জানানো হয়, দেশের বন্যা কবলিত ১১ জেলায় তিন কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। একই সঙ্গে ২০ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন চাল ও ১৫ হাজার বস্তা শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে৷ 

এতে আরও জানানো হয়, বরাদ্দকৃত নগদ টাকা ও ত্রাণ ছাড়াও দেশের সকল জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহের জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় করে এক সাথে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।

১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য মোট ৬৩৯টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা এবং সচিব বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। উপদেষ্টা এখনো উপদ্রুত এলাকায় অবস্থান করছেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বর্তমানে উপদ্রুত এলাকায় অবস্থান করছেন।

সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য-সহায়তা প্রদানের জন্য আগ্রহী ব্যক্তিগণ প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের অ্যাকাউন্টে সহায়তার অর্থ প্রেরণ করতে পারেন। হিসাবের নাম। 'প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল', ব্যাংক: সোনালী ব্যাংক কর্পোরেট শাখা, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, হিসাব নম্বর: ০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩।