রুপগঞ্জের সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গডফাদার গোলাম দস্তগীর গাজী গ্রেপ্তার

সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী গ্রেপ্তার

নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তাঁকে রুপগঞ্জ-পূ্র্বাচল এলাকার মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গডফাদার বলা হয়। তিনি ও তার বড় ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজী মিলে নারায়নগঞ্জ-গাজীপুরের বিস্তৃর্ণ ওই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন। তার রয়েছে নিজস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীও, যারা ভিন্ন মত দমন ও ভূমি দখলে সরাসরি কাজ করে। রুপগঞ্জে গোলাম দস্তগীর গাজীর আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক দল সরাসরি করা অলিখিতভাবে নিষিদ্ধ ছিল। তিনি তার স্ত্রীকেও বছরের পর বছর ধরে দলের বিভিন্ন লাভজনক পদে বসিয়ে লুটপাটের সহযোগী বানিয়েছেন। গোলাম দস্তগীর গাজী স্বৈরাচারী পতিত শেখ হাসিনারও খুব ঘনিষ্ট কয়েকজনের মধ্যে একজন।

শনিবার (২৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে।

গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্টন থানার ওসি মোল্লা মো. খালিদ হোসেন বলেন, সাবেক পাটমন্ত্রীকে শান্তিনগরের একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর রূপগঞ্জে ছাত্র-জনতা আনন্দ মিছিল করে। সেই মিছিলে হামলা-গুলিতে দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান মিয়া নিহত হয়। এই ঘটনায় গত ২১ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী, তাঁর ছেলে গোলাম মর্তুজা পাপ্পা গাজীসহ ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৬০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। রূপগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন নিহত রোমানের খালা রিনা।

এদিকে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগের মাধ্যমে তাঁর সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। তিনি বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। 

সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনাসহ সাবেক মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা–কর্মীদের নামে অর্ধশতাধিক হত্যা মামলা হয়েছে। ১৪ দল নেতা রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নামেও হত্যা মামলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভা সদস্যদের নামে গণহত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। 

এসব মামলায় এরই মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন ক্ষতাচ্যুত সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রী। এর মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাঈদ আহমেদ পলক, সাবেক উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ।