ফেনীতে বন্যার পানি কমছে

ফেনীতে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়াতে ইতোমধ্যে বন্যার পানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফেনী শহরেও পানি কমছে। তবে, সোনাগাজী, দাগনভূঞাতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে রয়েছে। আজ রোববার তথ্যগুলো ফেনী জেলা প্রশাসন সূত্র নিশ্চিত করেছে।

শহরে তিনদিন পর কয়েকটি সড়ক থেকে পানি নেমেছে। শহরের উকিল পাড়ার বাসিন্দা ওমর বিন হোসাইন জানান, গত শুক্রবার তার বাসার একতলা পানিতে নিমজ্জিত ছিল, আজ সকালে পানি সরে গেছে। মিজান রোডের বাসিন্দা বদরুল আমীন জানান, পানি নেমে গেছে। তবে, বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় বিপত্তি রয়ে গেছে।

বিশুদ্ধ পানির খোঁজে শহরের ট্রাঙ্করোডে আসা একাডেমি এলাকার বাসিন্দা হারুন রশিদ জানান, গত দুইদিন সেখানে ১২ ফুট উচ্চতার বেশি বন্যার পানি প্রবাহিত হয়েছে। এখন কমে নিচতলায় হাঁটুজল রয়েছে।

দাগনভূঞা শহরতলীর বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃহস্পতিবার তার ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। এরপর পরিবারসহ ঘর থেকে বেরিয়ে গেছেন। পানি শনিবার রাতেও বেড়েছে।

সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের বক্তারমুন্সির বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা জুলফিকার আলি জানান, দুইদিন ধরে পানিবন্দি রয়েছেন।

মতিগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মী সাহেদ সাব্বির জানান, দৃষ্টিজুড়ে পানি, শুকনো স্থান চোখে পড়ছে না। বন্যাদুর্গত এলাকায় স্বেচ্ছাসেবকদের উদ্ধার তৎপরতা উল্লেখযোগ্যহারে লক্ষ্য করা গেছে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্যার্তদের উদ্ধার এবং শুকনো খাবার সহায়তায় ভূমিকাপালন করছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার।

ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখা সূত্র জানায়, সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গতকাল পর্যন্ত ৫০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ৪০ লাখ টাকা এবং ২ হাজার টন চাল ত্রাণকার্যের জন্য বরাদ্দ এসেছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে খিচুড়ি ও শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস এবং ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে উদ্ধার কাজ চলমান। নৌকা ছাড়াও হেলিকপ্টারের মাধ্যমেও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, জেলার অধিকাংশ এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল রয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ দুই-তৃতীয়াংশ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।