গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য ইসি দায়ী: রিজভী

ফাইল ছবি

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য যারা দায়ী তাদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনও রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবিধানিক ব্যবস্থা লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

রিজভী বলেন, আপনি, সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল একতরফাভাবে কারচুপি-ডাকাতির নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছেন। কেন পদত্যাগ করলেন না? দেশ ও জাতির চেয়ে চাকরির গুরুত্ব কি আপনার কাছে বেশি ছিল? আমাদের দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য যারা দায়ী তাদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন অন্যতম।

গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারের প্রতিবাদে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কৃষিবিদ সমিতি (এ্যাব)।

রিজভী বলেন, তরুণ ও কিশোরদের নেতৃত্বে পৃথিবী কাঁপানো আন্দোলনের মাধ্যমে এক ভয়ংকর দানবকে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি, ২০ দলীয় জোটসহ সমমনা দলগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পথ সুগম করতে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তার ওপর ভিত্তি করেই ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটে।’

স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন শহীদদের আত্মত্যাগের সঙ্গে সম্পূর্ণ বিশ্বাসঘাতকতা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বিএনপি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রতি গভীরভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ একটি রাজনৈতিক দল। আমরা সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

তিনি বলেন, ‘অতীতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এমন একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা ক্ষমার কথা বলছেন। যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের আমরা কীভাবে ক্ষমা করতে পারি?’

সব অফিস-আদালত-আদালতে শেখ হাসিনার ভূত এখনো বিদ্যমান উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন একটি বিশেষ মহলের লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করলে চারটি ছাড়া বাকি সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছরের ক্ষমতায় থাকাকালে কিছু সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দিয়ে এবং মিডিয়ার মালিকানা দলের অনুগতদের কাছে হস্তান্তর করে ভিন্নভাবে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। ‘তাই এসব গণমাধ্যমগুলো ধারাবাহিকভাবে আওয়ামী লীগের প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে।’

রিজভী বলেন, গণমাধ্যমের প্রাথমিক কাজ হচ্ছে সত্য উদঘাটন ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। ‘গণতন্ত্রের জন্য এটা অপরিহার্য। গণমাধ্যম যখন এই ভূমিকায় ব্যর্থ হয়, তখন তা গণতন্ত্রের স্তম্ভের পরিবর্তে স্বৈরশাসকদের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশে স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য গণমাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম।’

দেশে গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যম অত্যাবশ্যক উল্লেখ করে তিনি সাংবাদিকদের সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানান।