ঋণে গাড়ি কেনার পর অন্য দপ্তরের গাড়ি ব্যবহার করা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

সরকারি কর্মচারীদের প্রাধিকার বহির্ভূত গাড়ি ব্যবহার বন্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার। গাড়ি কেনার সুদমুক্ত ঋণ গ্রহণ এবং গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার পরও যারা কোনো দপ্তরের গাড়ি ব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে সরকার।

প্রকল্প ও সরকারি দপ্তর-বিভাগগুলোর গাড়ি অবৈধভাবে ব্যবহার বন্ধে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ এক সার্কুলারে সরকারি কর্মচারীদের নিয়ম বহির্ভূতভাবে গাড়ি ব্যবহার বন্ধ করার জন্য ও গাড়ি ব্যবহারে কঠোর ভাবে নিয়ম মানার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।

এর আগে সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এ ব্যাপারে একটি চিঠি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় পাঠানো হয়েছিল। সরকারি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো জরুরি সভা করে এ ধরনের গাড়ির ব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সার্কুলারে বলা হয়েছে, কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিভিন্ন দপ্তর / অধিদপ্তর / সংস্থা / ব্যাংক বীমা কোম্পানি, ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের হতে অধিযাচন করে গাড়ি আনা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত ঋণ এবং গাড়ি সেবা নগদায়ন নীতিমালা ২০২০ এর আওতায় গাড়ির ঋণ সুবিধাপ্রাপ্ত কোন কোন কর্মকর্তা গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় সমুদয় অর্থ পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণ করার পরও অনৈতিক ও বিধি বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ব্যবহার করেছেন কর্মচারীরা।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, প্রাধিকার বহির্ভূত গাড়ি ব্যবহারের এমন প্রবণতার ফলে একদিকে জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খলা ও আর্থিক অপচয়ের কারণ ঘটেছে। অন্যদিকে তেমনি নৈতিকতার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে সমাজে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ভাবমূর্তি  মারাত্বক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এতে সরকারের দায়িত্ব সচেতনতা সম্পর্কেও জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ ধারণা তৈরি হচ্ছে। সরকার এ ধরনের বিষয়ে অনমনীয় নীতি গ্রহণ করেছে। সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের হিসাবে সরকারি পরিবহন পুলে প্রায় দুই হাজার গাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ২০০টি গাড়ি। বাকি গাড়িগুলো স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ব্যবহার করে থাকেন। এসব গাড়ির তেল ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ সরকারিভাবে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর এবং প্রকল্পের গাড়ির হিসাব থাকার কথা বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ আইএমইডির দপ্তরে। নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর এবং শেষ হওয়ার পর গাড়ির হিসাব ওই সংস্থার কাছে দিতে হবে। কিন্তু তাদের কাছে গাড়ির কোনো হিসাব নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, প্রকল্পগুলোয় তিন থেকে চার হাজার গাড়ি থাকার কথা।