‘ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেবে ইউনূস-বাইডেনের বৈঠক’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে (নিউ ইয়র্ক সময় মঙ্গলবার সকালে) বৈঠক করছেন, যা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ককে নতুন স্তরে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে। বৈঠকটিকে একটি বিরল ঘটনা হিসেবেও মনে করা হয়।
নিউইয়র্ক সময় বেলা ১১টায় শুরু হওয়া বৈঠকের আগে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এ ধরনের বৈঠক খুবই বিরল। আমরা আশা করছি বৈঠকটি খুবই ফলপ্রসূ হবে।’
শফিকুল আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক বজায় রয়েছে এবং এই বৈঠকের মাধ্যমে এ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, বৈঠকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, গণতান্ত্রিক উত্তরণ এবং বাংলাদেশের সংস্কার বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি ভালো খবর যে, এই ক্রান্তিকালে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’
শ্রমখাতের সংস্কার ও রোহিঙ্গা ইস্যুসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠকটি দুই দেশের ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের প্রতিফলন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিউইয়র্কে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউএনবিকে বলেন, এটি একান্ত বৈঠক হতে যাচ্ছে।
কর্মকর্তা আরও বলেন, এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ কারণ গত কয়েক দশকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কোনো সরকার প্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেননি।
বৈঠকটি কমপক্ষে ১৫ মিনিট স্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়া স্বাভাবিক নয় এবং ঢাকা আশা করছে এই বৈঠক থেকে একটি নতুন কৌশলগত অংশীদারিত্ব বেরিয়ে আসবে, যা সব ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফর করছেন বাইডেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নিউইয়র্ক সফর নিয়ে প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়েরে বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট বাইডেন আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি মোকাবিলা, বৈশ্বিক সমৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়া এবং মানবাধিকার রক্ষায় সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করতে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রাতিষ্ঠানিক গঠন ও উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে তাদের নিবেদনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
যেহেতু বাংলাদেশ আরও ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের রূপরেখা খুঁজছে, তাই যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা এই প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে এটি অধ্যাপক ইউনূসের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর প্রথম বিদেশ সফর।