ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে রিভিউ আবেদনের শুনানি আজ

বাংলাদেশ হাইকোর্ট

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি শুনানির জন্য আজ রোববার সর্বোচ্চ আদালতে উঠছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আমলে রিভিউ আবেদনটি করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চের আজকের কার্যতালিকায় ১ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে এই রিভিউ আবেদন।

বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল আনে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বিলটি সংসদে পাস হয়।

পরে এর বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন নয়জন আইনজীবী। ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। একই বছরের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতিতে আপিল খারিজ করে রায় দেন। ফলে ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে।

আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ১ আগস্ট। বিচারপতি সিনহা তার লেখা রায়ে গণতন্ত্র, রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, সুশাসন, দুর্নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেন। রায়ে তার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সরকারের মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও দলটির সমর্থক আইনজীবীরা। তারা প্রধান বিচারপতি সিনহার পদত্যাগের দাবি তোলেন।

একপর্যায়ে বিচারপতি সিনহা ছুটি নিয়ে বিদেশে চলে যান। তাকে অসুস্থতার কথা বলে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও তখন আলোচনা ছিল। যদিও ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর বিদেশে যাওয়ার প্রাক্কালে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তিনি অসুস্থ নন, ক্ষমতাসীনদের সমালোচনায় তিনি বিব্রত। পরে অবশ্য বিদেশে থাকা অবস্থায়ই তিনি পদত্যাগ করেন। আর দেশে ফেরেননি।

এদিকে ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।