বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, একসঙ্গে থাকতে হবে: ভারতের সেনাপ্রধান
ভারতের কাছে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি বলেছেন, আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। এমন কোনো কিছু করা উচিত না, যাতে আমাদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য হিন্দু।
সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তে পাঁচটি জায়গায় ভারতের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা ঘিরে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলবের পরদিনই দেশটির সেনাপ্রধান এমন কথা বললেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরু থেকেই তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীর প্রশ্ন নেন। নানা জন নানা বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ইন্ডিয়া টুডে’র এক সাংবাদিক চলমান বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য জানতে চান।
উত্তরে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী। দেশটির খুব ছোট্ট একটি অংশ ছাড়া পুরো সীমান্তজুড়েই রয়েছে ভারত। আমাদের সবসময় একসঙ্গেই থাকতে হবে। একে অপরকে বুঝতেও হবে। এমন কোনো কিছু করা উচিত না, যাতে আমাদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে তার। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের সময় বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছিল। সবশেষ বাংলাদেশ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে গত বছরের ২৪ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সে যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে যখন একটি নির্বাচিত সরকার আসবে, তখন আমাদের এ নিয়ে কথা বলা উচিত। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক ভালো এবং সঠিক পথে রয়েছে। দু’দেশের সেনাবাহিনীর সম্পর্ককে তিনি ‘ওয়েল অ্যান্ড পারফেক্ট’ বলে মন্তব্য করেন।
ভারত-বাংলাদেশের সেনার যৌথ মহড়া কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামরিক ক্ষেত্রে দু'পক্ষের মধ্যে যে সমন্বয় ছিল, তা সেরকমই আছে। একমাত্র যে যৌথ মহড়া হত, সেটা বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছুটা সময়ের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। যখন পরিস্থিতির উন্নতি হবে, তখন সেই যৌথ মহড়া চালানো হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দিল্লিতে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকেই ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কূটনৈতিকভাবে দু’পক্ষের মধ্যে চেষ্টা চলছে।