রাজউকে প্লট : হাসিনা ও জয়ের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজউক থেকে প্লট নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো করা হয়। দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, দুই মামলায় আলাদা করে শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

জয়কে প্রধান আসামি দেখানো মামলায় সহায়তায়কারী হিসেবে শেখ হাসিনাকেও আসামি করা হয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি দেখানো মামলায় গৃহায়ন ও রাজউক কর্মকর্তাসহ মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।

মামলার আসামিরা হলেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক রাজউক চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী আনিছুর রহমান মিঞা (পিএএ), জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক সদস্য শফিউল হক, মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (ইঞ্জিনিয়ার) ও প্রতিষ্ঠানটির সাবেক উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ।

অন্যদিকে, জয়ের বিরুদ্ধে করা মামলায় শেখ হাসিনা এবং গৃহায়ন ও রাজউক কর্মকর্তাসহ মোট ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন—সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,  গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন ও সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার।

এছাড়া সাবেক রাজউক চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী আনিছুর রহমান মিঞা (পিএএ), প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ), মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (ইঞ্জি), পরিচালক কামরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ ও পরিচালক নুরুল ইসলামও রয়েছেন এই মামলায়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ মালিকানায় এবং তার ছেলে, মেয়ে, বোন, বোনের মেয়ে ও বোনের ছেলের নামে ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরও তা হলফনামায় গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পের বরাদ্দ সংক্রান্ত আইনবিধি ও নীতিমালা এবং আইনানুগ পদ্ধতি লঙ্ঘন করেছেন। তার দপ্তরসহ প্রকল্পের বরাদ্দ-বিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) গণকর্মচারীদের প্রভাবিত করে নিজে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে দায়িত্বে বহাল থাকা অবস্থায় নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের অতি মূল্যবান কূটনৈতিক এলাকায় ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রাস্তার প্লট নম্বর ০০৯ নিজ নামে দখলসহ রেজিস্ট্রিমূলে গ্রহণ করে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৬১/৪০৯/৪২০/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় দণ্ডযোগ্য অপরাধ করেছেন আসামিরা।

এর আগে, সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজউক থেকে প্লট গ্রহণের অভিযোগে শেখ রেহানা, তার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়। প্রতিটি মামলায় ১২ থেকে ১৩ জন রাজউক ও গৃহায়নের কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।