এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি চলাকালে হামলা, আহত অনেকে
২০২৫ সালের নবম-দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয়পত্র বইয়ের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দটি রাখা ও বাদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কার্যালয়ের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
গত ১২ জানুয়ারি ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ নামের একটি সংগঠন এনসিটিবির কাছে বিক্ষোভ করলে গ্রাফিতিটি সরিয়ে ফেলা হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাঠ্যবইয়ে গ্রাফিতিটি পুনর্বহালের দাবিতে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) এনসিটিবির সামনে কর্মসূচি পালন করতে যায় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে একটি দল।
অপরদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী অখণ্ড ভারতের কল্পিত গ্রাফিতি সংযোজনের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে এনসিটিবি ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে যায় স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উভয় গ্রুপ এনসিটিবি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে আলাদাভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করে। তবে দুপুর ১টার দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয় এবং পরবর্তীতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুদল।
এ ঘটনায় দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছে।
পাহাড়ি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি অলিক মৃ বলেন, স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি হামলা চালিয়ে আমাদের ১১ সদস্যকে আহত করেছে।
তার দাবি, এনসিটিবি পাঠ্যবইয়ে এবার ‘আদিবাসী’ লেখা গ্রাফিতি যুক্ত করেছিল। তার বিরুদ্ধে ‘মব’ তৈরি করা হয়। পরে আদিবাসী লেখা গ্রাফিতি বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই গ্রাফিতি পুনর্বহাল করতে হবে।
এদিকে স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম বলেন, আদিবাসী শব্দটি কোনো জাতিগত পরিচয় নয়। কাজেই আদিবাসী শব্দের বিরোধিতা করলে রেসিজম (বর্ণবাদ) হয় না।
তার অভিযোগ, আমরা তাদের ওপর হামলা চালাইনি। তারাই আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে আমাদের অন্তত ১৪ জনকে আহত করেছে।
আহতদের মধ্যে ৯ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তারা হলেন— রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা (২৫), ইসাবা শুহরাত (৩২), রেংইয়ং ম্র (২৭), ফুটন্ত চাকমা (২২), ধনজেতরা (২৮), অন্তত ধামাই (৩৫), ডিবিসি টিভির সাংবাদিক জুয়েল মারাক (৩৫), শৈলী (২৭) ও ডোনায়ই ম্রো (২৫)।
এ বিষয়ে মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহিমেনুল ইসলাম জানান, স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টির সদস্যরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।