অক্টোবরের মধ্যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের ৩-৪টি মামলার রায় পাওয়া যাবে

অক্টোবরের মধ্যে জুলাই হত্যাকাণ্ডের অন্তত ৩ থেকে ৪টি মামলার রায় পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

তিনি বলেছেন, ‘এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা, শীর্ষস্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা আসামি হিসেবে রয়েছেন।’

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের যে বিচার, সেই বিচারের অগ্রগতি কী হয়েছে—সেটা জানতে চান অনেকে। একটা কমন অভিযোগ হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জুলাই হত্যাকাণ্ড-সংক্রান্ত যে মামলাগুলো আছে, সেগুলোর দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না। এ ধরনের অসন্তুষ্টির কথা অনেকে বলেন। আমরা উনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হওয়া এবং ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের পর ইতোমধ্যে এ আদালতে বিচারের যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই আদালত পুরোপুরিভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে ৪ মাস আগে। আদালতে ৩০০টির বেশি অভিযোগ সেখানে করা হয়েছে। আমাদের প্রসিকিউশন টিম যাচাই-বাছাই করে ১৬টি মামলা করেছে। এই ১৬টি মামলার মধ্যে ৪টির তদন্ত কাজ এ মাসের মধ্যেই শেষ হবে। এরপর চার্জশিট গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কাজ শুরু হবে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আইন অনুযায়ী বিচার কাজ শুরু হওয়ার পর ডিফেন্স আইনজীবীদের প্রস্তুতির জন্য ৩ সপ্তাহ সময় দিতে হয়। আমরা আশা করছি, এই ৩ সপ্তাহ অতিবাহিত হলে আনুষ্ঠানিকভাবে সাক্ষ্য গ্রহণের যে প্রক্রিয়া, সেটা আপনারা খুব ঘন ঘন দেখবেন। এই সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়াটা শুরু হবে ঈদের পরপর, এপ্রিল মাস থেকে।’

তিনি বলেন, ‘আদালতে অব্যাহতভাবে শুনানি হয় বলে সব মামলার রায় পরবর্তী ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে, অর্থাৎ এপ্রিল থেকে শুরু করে পরবর্তী ৪ থেকে ৬ মাসের মধ্যে দেওয়া যাবে বলে আশা করি।’

‘যদি পুরো বিচারকার্যটা ধরি, পুরো বিচারকার্যটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের এক বছরের মতো সময় লাগছে। অথচ শেখ হাসিনার আমলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির একজন নেতার বিচার হয়। সেই বিচার কাজ শেষ করতে গড়ে কমপক্ষে আড়াই বছর লেগেছিল। সেখানে আমাদের অর্ধেকেরও কম সময় লাগছে।’

সময় কম লাগার কারণ ব্যাখ্যা করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের প্রসিকিউশন টিম ও তদন্ত টিম অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দিনরাত কাজ করছে। আরেকটি কারণ হচ্ছে, আগের বিচারগুলো হয়েছিল অনেক দিনের আগের ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে, আর এখন যে বিচার হচ্ছে এটার সাক্ষ্যপ্রমাণ এত বেশি আছে যে আমরা আশা করছি, এক বছরের মধ্যেই আমরা প্রথম কয়েকটি রায় পাব।’

আগামী দুই-একদিনের মধ্যে জাতিসংঘের তদন্ত টিমের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এই রিপোর্টের ব্যাপারে এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলব না। তবে একটা জিনিস বলে রাখি, তাদের এই রিপোর্ট আমাদের তদন্ত ও বিচার কাজটাকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার পাশাপাশি বিচার প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও সহজ করতে অনেক অবদান রাখবে।’