ব্যস্ত সূচি নিয়ে ঢাকায় জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস
ব্যস্ত সফর সূচি নিয়ে ঢাকায় পৌঁছেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকালে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে অবতরণ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মো. তৌহিদ হোসেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনসহ একাধিক বৈঠক করতে শুক্রবার ও শনিবারের ব্যস্ত কর্মসূচি নিয়ে ঢাকায় এসেছেন। তিনি রবিবার সকালে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
গুতেরেস শুক্রবার সকালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করবেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যু ও অগ্রাধিকার বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান একসঙ্গে রাজধানীর একটি হোটেলে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
পৃথক দুটি বৈঠকের পর জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধান উপদেষ্টাকে সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে কক্সবাজার যাবেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম শুক্রবার দুপুর ১২টায় কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানাবেন।
ইউএনআরসি, আরআরআরসি, আইএসসিজির প্রধান সমন্বয়কালী এবং আইওএম-ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধির নেতৃত্বে ওয়াচ টাওয়ারে এক ব্রিফিংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও মিয়ানমার সীমান্তের দৃশ্য দেখানো হবে।
বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্রিফিং করা হবে। এতে শরণার্থীদের মধ্যে অবকাঠামো এবং মানব পুঁজি বিনিয়োগ জোরদারে আইএফআইগুলোর ভূমিকা তুলে ধরা হবে।
ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ প্রশমন ও সেবা প্রদানের সমন্বিত পন্থা তুলে ধরা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, তারা আশা করছেন রোহিঙ্গা শিবিরে তাদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে ইফতার করবেন।
মিয়ানমারে নিপীড়ন ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের উদারতার স্বীকৃতি হিসেবে শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে ইফতারে অংশ নেবেন গুতেরেস ও ড. ইউনূস।
শুক্রবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজার থেকে তাদের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
শনিবার জাতিসংঘ মহাসচিব জাতিসংঘের নতুন সাধারণ ভবন প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করবেন এবং ৫০ বছর পূর্তির আলোকচিত্র প্রদর্শনী দেখবেন। এ সময় উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন উপস্থিত থাকতে পারেন।
গুতেরেস জাতিসংঘের কান্ট্রি টিমের সদস্য এবং জাতিসংঘের সকল কর্মীদের সঙ্গে একটি বৈঠকেও যোগ দেবেন।
তিনি সংস্কার সম্পর্কিত একটি গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নিতে পারেন এবং শনিবার তরুণদের সঙ্গে পৃথক সংলাপে অংশ নেবেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঞ্চালনায় সুশীল সমাজের সঙ্গেও বৈঠক করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজে যোগদানের আগে জাতিসংঘ মহাসচিব ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হোসেনের একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর শেষে রবিবার সকালে ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান।