বাঁধে আকস্মিক ভাঙনে ১০ গ্রামের ঈদ আনন্দ ম্লান

জেলার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে আকস্মিক ভাঙনে কমপক্ষে ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। ঈদের নামাজ শেষ হতে না হতেই এমন আকস্মিক ভয়াবহতায় বিমূঢ় এলাকাবাসী।  

আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে ঈদের নামাজ শেষে পাউবো বিভাগ-২ এর আওতাধীন ৭/২ পোল্ডারের বিছট গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের কাছ থেকে প্রায় দেড়’শ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করেই খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর ফলে আনুলিয়া ইউনিয়নবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঈদের আনন্দ গ্রামবাসীর কাছে নিরানন্দে পরিণত হয়। স্থানীয় গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন পয়েন্টে বিকল্প রিংবাধ নির্মাণের চেষ্টা চালালেও তা জোয়ারের তোড়ে ব্যর্থ  হয়ে যায়। এদিকে , বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে উপজেলার খাজরা, বড়দল ও প্রতাপনগরের নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আনুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপি নেতা এসএম শওকত হোসেন বাসসকে বলেন, সোমবার সকালে আমরা ঈদের নামাজ আদায়ে ব্যস্ত ছিলাম। নামাজ শেষে জানতে পারলাম আব্দুর রহিম সরদারের চিংড়ি ঘেরের কাছ থেকে প্রায় দেড়শ ফুট এলাকা জুড়ে বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে ধসে পড়ে। বিষয়টি গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার দিয়ে দ্রুত লোকজনকে ভাঙ্গন পয়েন্টে যেতে বলা হয়। গ্রামবাসীদের সাথে নিয়ে স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন পয়েন্টে একটি বিকল্প রিংবাধ নির্মাণের জন্য প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রবল জোয়ারের তোড়ে তাৎক্ষণিকভাবে নির্মিত বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে। 

তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট, বল্লবপুর, নয়াখালী, বাসুদেবপুর, আনুলিয়া, মীর্জাপুরসহ আশপাশের প্রায় ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের বাড়ি ঘরে ইতিমধ্যে পানি ঢুকে পড়েছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও কৃষি জমি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ সংস্কার করতে না পারলে পার্শ্ববর্তী খাজরা, বড়দল ও  প্রতাপনগর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। 

আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বাসসকে বলেন, বিছট গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বেড়িবাঁধের প্রায় দেড়শ ফুট এলাকা খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে। 

সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।