গুমের তদন্তকারীদের হত্যার জন্য বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল: চিফ প্রসিকিউটর

ফাইল ছবি

গুমের তদন্তকারীদের হত্যার জন্য বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণহত্যার তিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই চলছে। আমরা আশা করছি— অন্তত দুটি মামলার ফরমাল চার্জ এ মাসেই দাখিল করতে পারব।’

রবিবার (৬ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গুমের মামলাগুলো তদন্ত করছে।’

টিএফআই সেলের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেটার ভেতরে ভূগর্ভস্থ অনেকটা বলা যাবে, সেমি ভূগর্ভস্থ সেলগুলো আবিষ্কার করা হয়েছে। যেগুলো ওয়াল তুলে বন্ধ করা হয়েছে। সেই ওয়াল ভাঙতে হয়েছে। পুরো গার্বেজ দিয়ে সেটাকে ভরে রাখা হয়েছে। সেগুলো সরিয়ে ক্রাইম সিনগুলো বের করতে হয়েছে।’

‘আপনারা জানেন, এই কাজ করতে গিয়ে স্বয়ং চিফ প্রসিকিউটর তিনি এই ইনভেস্টিগেশন চলাকালে প্রেজেন্ট ছিলেন। আমরা যখন না বুঝে..., সেখানে বোমা ফিট করা ছিল, সেই বোমাগুলোর সঙ্গে টাইমার সেট করা ছিল। আমাদের অ্যাপারেন্টলি বোঝা যায় যে এই ইনভেস্টিগেশন করতে যারা গিয়েছেন, তাদের হত্যা করারও চেষ্টা করা হয়েছে।’

পরে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আর মন্তব্য করছি না। সময় হলে জানতে পারবেন। এত সব জটিলতার মধ্য দিয়ে যে কাজগুলো এগিয়েছে, সেগুলো প্রতিদিন জনসমক্ষে আসেনি। যে কারণে অনেকে মনে করতে পারেন যে তদন্তকাজ কিছু হয়নি।’

তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘হত্যা-গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা, আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলা ও চানখারপুল গণহত্যার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে এসেছে। এর মধ্যে অন্তত দুটি মামলার ফরমাল চার্জ এ মাসেই ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ (রবিবার) যাত্রাবাড়ীতে গণহত্যার অভিযোগে করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তিন মাস সময় মঞ্জুর করেছেন ট্রাইব্যুনাল। সাভারের আসহাবুল ইয়ামিন হত্যা মামলার আসামি সোহেল মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১৩ এপ্রিল ও চানখারপুলে হত্যাকাণ্ডে করা মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। কোনো ষড়যন্ত্র, কোনো স্ক্যান্ডাল বিচারকাজ থামাতে পারবে না। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থার কোনো দুর্নীতি কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। এছাড়া আমিসহ গুমের মামলা তদন্ত দলকে হত্যার জন্য বোমা পুঁতে রাখা হয়েছিল। কোনো ষড়যন্ত্র বিচার বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘আমরা মনে করি, একটি ট্রাইব্যুনাল যথেষ্ট নয়। আরও ট্রাইব্যুনাল হওয়া উচিত। সরকার এ বিষয়ে ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা করেছে। খুব সহসাই অন্তত দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের যাত্রা শুরু হবে বলে আমরা আশা করছি। তবে আসামিদের পক্ষ থেকে বিচার বানচালের চেষ্টা সফল হবে না।’