দাবি আদায়ে এনইপিসি শ্রমিকদের মানববন্ধন

শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেড কর্তৃপক্ষ পাওয়ার প্ল্যান্ট বিক্রি করে দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই অভিযোগ তুলে প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শ্রমিকরা।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) প্রতিষ্ঠানটির একদল শ্রমিক-কর্মচারী নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে এ দাবি জানান। ‘এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেডের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকবৃন্দ’ ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা জানান, ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেড একটি বহুজাতিক ভাসমান বিদ্যুতকেন্দ্র। যা ১৯৯৯ সালে কাঁচপুরের হরিপুর এলাকায় স্থাপিত হয়। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় আইপিপি। শুরু থেকেই এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এ দেশের দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি শেষ হওয়ার পর বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের ৫ শতাংশ প্রফিট বোনাস দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও কোম্পানিটি আজ পর্যন্ত সে প্রাপ্য পরিশোধ করেনি।

তারা বলেন, আমরা আজ এখানে উপস্থিত হয়েছি এক ন্যায্য দাবি ও দীর্ঘদিনের বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে। এনইপিসি কনসোর্টিয়াম পাওয়ার লিমিটেড গত প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করেছে। আমাদের ১৮৬ জন শ্রমিকের সততা, নিষ্ঠা, দক্ষতা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ওপর ভর করে তারা এই দেশে মুনাফা অর্জন করেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের প্রাপ্য ৫ শতাংশ প্রফিট বোনাসের টাকা পরিশোধ না করেই কোম্পানিটি তাদের একমাত্র স্থায়ী সম্পদ ১১০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বার্জ মাউন্টেড পাওয়ার প্ল্যান্ট বিক্রি করে দেশ ত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বক্তারা আরও বলেন, আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, লেবার কোর্ট আমাদের পক্ষে চূড়ান্ত রায় দিলেও এনইপিসি কর্তৃপক্ষ সেই রায়কে অগ্রাহ্য করেছে। তারা আদালতের রায় অবজ্ঞা করে দেশের সম্পদ বিক্রি করছে, যা একদিকে আইন লঙ্ঘন। অন্যদিকে শ্রমিকদের প্রতি চরম অন্যায়।

কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর অনেক কর্মী হতাশাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন মানববন্ধনে অংশ নেওয়া কর্মীরা। শ্রমিকদের বঞ্চিত করে কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে চলে যাওয়াকে অত্যন্ত অমানবিক এবং সামাজিক ও আইনগত অপরাধ বলেও দাবি করেন তারা।

প্রাশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বক্তারা বলেন, যতক্ষণ না এনইপিসি শ্রমিকদের প্রাপ্য ৫ শতাংশ প্রফিট বোনাস পরিশোধ করছে, ততক্ষণ তাদেরকে বার্জ বিক্রি করে দেশ ছাড়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না।