পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সদ্যপ্রয়াত ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের বাসিলিকা গির্জার সামনের চত্বরে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ড. ইউনূসের পাশাপাশি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কিসহ বিশ্বনেতারা যোগ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন অধ্যাপক ইউনূসের কাজের একজন বড় ভক্ত। তিনি বারবার ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নেওয়া উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন।
বিশেষ করে, অধ্যাপক ইউনূসের ‘তিন শূন্য’ নীতি, যেখানে পৃথিবীতে কোনো দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ থাকবে না, তা পোপ ফ্রান্সিস গভীরভাবে সমর্থন করতেন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ড. ইউনূসের সঙ্গে যৌথভাবে ভ্যাটিকানে ‘তিন শূন্য উদ্যোগ’ চালু করেন পোপ।
এর আগে, পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে যোগ দিতে এবং তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল (শুক্রবার) ইতালির রোম পৌঁছান অধ্যাপক ইউনূস। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছায়। সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।
এরপর গতকালই বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে সেন্ট পিটার্স স্কয়ারে পোপ ফ্রান্সিসের মরদেহের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান তিনি।
শনিবার পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি যোগ দিয়েছেন ক্যাথলিক ধর্মানুসারী থেকে শুরু করে শোকাহত হাজারো মানুষ।
ভ্যাটিকানের তথ্য অনুসারে, সেন্ট পিটার্স স্কয়ারের চারপাশে প্রায় ২ লাখ মানুষ জড়ো হয়েছেন। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অন্তত ১৬২টি প্রতিনিধি দল উপস্থিত রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৫০ জন রাষ্ট্রপ্রধান ও ১০ জন ক্ষমতাসীন রাজা রয়েছেন। আরও উপস্থিত রয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি কার্ডিনাল এবং প্রায় ৪ হাজার ধর্মযাজক।
বেশ কিছুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত সোমবার (২১ এপ্রিল) ৮৮ বছর বয়সে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যু হয়।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকালে তার মরদেহ সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় আনা হয়। ভক্তরা যাতে এই ধর্মগুরুকে শেষবারের মতো দেখতে পারেন, সে লক্ষ্যে ওইদিন সারা রাত খোলা রাখা হয়েছিল বাসিলিকা।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জনসাধারণের জন্য প্রদর্শন শেষ হয়। এই তিন দিনে আড়াই লাখের বেশি মানুষ পোপ ফ্রান্সিসকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে ভ্যাটিকান।
এদিকে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান শেষে আগামীকাল (রবিবার) স্থানীয় সময় সকাল ৮টার দিকে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা) ড. ইউনূস রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি বিমানবন্দর থেকে দেশের উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। এরপর সোমবার ভোরে তিনি ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন উপ-প্রেস সচিব।