পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই স্মৃতিচারণ
জুলাই পুনর্জাগরণ ২০২৫ উপলক্ষে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিবিপ্রবি) বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বেলা ১১টায় প্রশাসনিক ভবন প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, জুলাই যোদ্ধা ও কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহতদের অভিজ্ঞতায় ‘জুলাই স্মরণ ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ জুলাই যোদ্ধারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তাদের অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করেন এবং আন্দোলনের ভয়াবহতা তুলে ধরেন। পরে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পিবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। পিবিপ্রবি উপাচার্য জুলাই অভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, জুলাইয়ের এই গণঅভ্যুত্থান শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ ৩৬ দিনের ত্যাগ ও তিতিক্ষার গল্প। এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে আমরা সেই গল্প শুনবো।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ভয়াবহতা তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, আন্দোলন চলাকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা পাখির মতো মানুষ মেরেছে। রংপুরের আবু সাঈদের মারা যাওয়ার মধ্য দিয়ে মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়। সবমিলিয়ে প্রায় ১৪০০ মানুষ জীবন দিয়েছেন, এর মধ্যে অনেক নারী ও শিশুও রয়েছেন। এমনকি বাসার ছাদে থাকা ও জানালার পাশে দাঁড়ানো মানুষও হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে জীবন দিয়েছেন। কোনো স্বাধীন দেশে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও যে এ ধরণের হামলা হতে পারে তা অকল্পনীয়।
পরে জুলাই আন্দোলনে গুলিতে চোখ হারানো পদ্মা সরকারি কলেজের ছাত্র মো. ছাকিন আহমেদ, হামলায় আহত পিরোজপুরের সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের ছাত্র ফাহাদ সিকাদার, পিবিপ্রবি শিক্ষার্থী নাফিস আহনাফ, রিয়াজুস শামস ও মো. রিফাত হোসেন জুলাই গণঅভুত্থানের স্মৃতি তুলে ধরেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলা ও গুলির ঘটনায় জড়িতদের এবং এর নির্দেশদাতা ও মদদদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান। পাশাপাশি দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার আহ্বান জানান।
এর আগে পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এতে পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইসরাত জাহান, পিবিপ্রবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আকতার হোসেন, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ পান্না লাল রায়, পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ শেখ রফিকুল ইসলাম, পিরোজপুর জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ-আল-মাসুদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।