মানুষের মনে ভয় কাটতে শুরু করেছে 

কোটা সংস্কার আন্দোলন সামলানো নিয়ে সরকারের চিন্তা ছিলো একরকম। নীতিনিধারকরা ধারণা করছিলো তারা ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুন্ডা-মাস্তান দিয়ে এ আন্দেলনকে দমাতে পারবে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে ছাত্রলীগের গুন্ডামীর ফলাফল হিতে বিপরীত হয়েছে। 

আওয়ামী লীগের শাসনামল হচ্ছে একটা ভয়াল কালের উপ্যাখান। এ সময়ে গুম করা হয়েছে শত শত মানুষকে। রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিরুদ্ধমতের কর্মী সমর্থকদের। পুলিশ এবং ছাত্রলীগের গুন্ডারা কাঁধে কাঁধ রেখে প্রকাশ্যে গুলী করছে রাজধানীর রাজপথে। এসবের ছবি-ভিডিও সামাজিক গণমাধ্যমে আসার পরও বিচারের মুখোমুখি কার হয়নি কাউকে। 

সরকারের উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত পরিস্কার— দেশের মানুষের মনে ভয় জিইয়ে রাখতে হবে। এই ভয়ের কারণে এখন পর্যন্ত অনেকে প্রকাশ্যে কথা বলতে পারতেন না— সোশাল মিডিয়াতে স্টেটাস দেয়ার কারণে যে দেশে মানুষকে জেলে যেতে হয়, সেদেশে বাক স্বাধীনতার চিন্তা তো দূর অস্ত। 

কিন্তু বাড়াবাড়ির একটা সীমা থাকে। সীমা থাকে মানুষের ধৈর্যেরও। একে তো এ সরকারের কোন জনপ্রিয়তা বা বৈধতা নেই, তার উপর সে সরকারের প্রধানের বড় গলা!

আজ দেশের মানুষ পথে নেমেছে। ঢাকা পরিণত হয়েছে বিক্ষোভের নগরীতে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী না, রাস্তায় নেমেছে স্কুলের শিক্ষাত্রীরাও। সাধারণ মানুষ শামিল হচ্ছেন এ আন্দোলনে। 

যেভাবে সাধারণ মানুষ কোটাবিরোধীদের কাতারে শামিল হচ্ছেন, গুন্ডা-মাস্তান দিয়ে এ আন্দোলন ঠেকানো যাবে না বলেই মনে হচ্ছে। মানুষ আগে সরকারেরবিরোধী কথাবার্তা বলতেন রয়ে সয়ে— এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো শেখ হাসিনার সেই সমালোচিত বক্তব্যের প্রতিবাদে সরব। খোদ ছাত্রলীগ থেকেই পদত্যাগের খবর আসছে।

মানুষের মনে ত্রাসের যে রাজত্ব আওয়ামী লীগ এতোদিন কায়েম করেছিল তার শেষের শুরু হলো আজ থেকে। কোটাবিরোধী আন্দোলনে সরকারের এই টালমাটাল অবস্হা প্রমান করে সরকার আসলে কতো অজনপ্রিয় এবং অসহায়। পুলিশ-ছাত্রলীগ, গুম-খুনের রাজত্বে এ আন্দোলন যেন গণমানুষের প্রাণের স্পন্দন। মানুষ আজ তৈরী একটা বিপ্লবী পরিবর্তনের জন্য।