অপ্রস্তুত ভারত

মাহবুব মোর্শেদ। ফাইল ছবি : ফেসবুক

থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর ভারতের মিডিয়ার প্রতিক্রিয়া বোঝার চেষ্টা করছিলাম। ভারতীয় মিডিয়া ও এর বিশ্লেষকরা যথারীতি নানা রকমের ইতংবিতং অব্যাহত রেখেছেন। বাংলাদেশের মিডিয়া বরং অনেকটাই দায়িত্বশীল ও বাস্তবসম্মত বিশ্লেষণ করছে। কিন্তু একটা বড় পয়েন্ট সবাই এড়িয়ে গেছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন ও পলায়নের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গভীর জটিলতায় পর্যবসিত হয়। শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের পেছনে ভারতের সক্রিয় ভূমিকা এখন আর কোনো লুকোছাপার বিষয় নয়। ভারতের সহযোগিতাতেই শেখ হাসিনা যে ২০০৮ সালের ইলেকশন জিতেছিলেন এবং পরবর্তী তিনটি ইলেকশন ডাকাতি করতে পেরেছিলেন তার স্বপক্ষে অসংখ্য তথ্যপ্রমাণ এখন জনগণের হাতে আছে। শেখ হাসিনার পতনের আগ পর্যন্ত বলা হতো, ভারত একে একে দক্ষিণ এশিয়ায় তার সকল মিত্র বা সমর্থিত শাসকদের হারিয়ে একরকম একা হয়ে গেলেও কৌশলগত মিত্র বাংলাদেশ তার পক্ষে থাকায় দেশটি যথেষ্ট শক্তিশালী অবস্থানে আছে। ফলে, ভারত যে কোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার সব চেষ্টাই করেছিল। গণঅভ্যুত্থানের সময়ও সে চেষ্টা অব্যাহত ছিল। কিন্তু বাঁধভাঙ্গা গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে তো বটেই পুরো বা দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পতন ঘটে গেছে। এখন সেই অর্থে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো শাসকই আর ভারতের পকেটে নেই।

ফলে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত একটা বড় ধরনের বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মসনদ থেকে একের পর এক ভারতপন্থী শাসকদের বিদায় ভারতের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক ও কৌশলগত বিপর্যয় হিসেবে দেখা হয়। এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে ভারতকে বহু বছর অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতনের পর শুধু যে ভারতীয় শাসক শ্রেণী ‘নার্ভাস’ হয়ে গেছে তা নয়, ভারতের মিডিয়া ও মিডিয়ার মাধ্যমে ভারতীয় জনগণের মধ্যেও বাংলাদেশ সম্পর্কে তীব্র নেতিবাচক ধারণা ও শত্রুতা তৈরি হয়েছে। তাদের মধ্যে এক ধরনের উপনিবেশ হারানোর বেদনা তৈরি হয়েছে। তারা ভালো করেই জানে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভারত গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা নতুন বাংলাদেশের সঙ্গে একটা স্থায়ী শত্রুতা গড়ে তুলেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক অতীতে বাংলাদেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তারা যে বৈরী আচরণ করেছে তাতে বাংলাদেশে ভারতের কোনো নতুন বন্ধু তৈরি হবে এমন কোন আশা ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা দেখতে পাচ্ছে না। ফলে তুরুপের তাস হিসেবে তারা শেখ হাসিনাকেই নিজেদের কাছে রেখে দিতে চাইবে এবং মোক্ষম সময়ের অপেক্ষা করতে থাকবে কখন শেখ হাসিনাকে দেশে পাঠিয়ে আবারও বাংলাদেশে পুরনো উপনিবেশ প্রতিস্থাপন করা যায়।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত কোনো বন্ধুত্বমূলক সম্পর্কে যেতে আগ্রহী হবে না এটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ হাতছাড়া হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদির কূটনীতি ও কৌশল তাদের দেশের ভেতরেই ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে, তিনি ভীষণ রকম চাপে পড়েছেন। এই চাপ অগ্রাহ্য করে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা নরেন্দ্র মোদির পক্ষে প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার ছিল। 

কিন্তু ভারতের শাসকরা ভালো করেই জানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে না চাইলেও তাদের বসতে হবে। কেননা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ব্যাপারে তিনি খুবই দক্ষ একজন ব্যক্তি। তিনি ব্যক্তিগতভাবে পৃথিবীব্যাপী যে প্রভাববলয় তৈরি করেছেন তাতেই তাকে বিশ্বনেতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এখন তো পুরো বাংলাদেশ তার সঙ্গে। তিনি সরকারপ্রধান, ফলে তাকে অস্বীকার করা খুব কঠিন।

অন্যদিকে, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশে তীব্র ভারতবিরোধী মনোভাব গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে গণঅভ্যুত্থানের পর জনগণের ভেতরে ভারতকে কোন ছাড় না দেওয়ার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। সকলেই খেয়াল করেছেন, কেউই ভারতপন্থী কথাবার্তা বলে সমালোচনা ও ভর্ৎসনার হাত থেকে রেহাই পায় পান না। এরকম একটি পরিস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের সঙ্গে যে কোনো রকমের এনগেজমেন্টে গেলে সেটা দেশে কী প্রতিক্রিয়া তৈরি করে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় ছিল।

আমাকে একজন কূটনীতি-বিশ্লেষক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের আগেই বলেন, বিমসটেক সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু আগে থেকেই ঘোষণা দেওয়া হলে দুই দেশেই তারা নানান রকমের চাপ ও সমালোচনার মধ্যে পড়বেন। ফলে, হয়তো শেষ মুহূর্তে গিয়ে বৈঠকটির কথা নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু তিনি ধারণা করছেন বৈঠকটি হবেই। কার্যক্ষেত্রে আমরা তাই ঘটতে দেখলাম। এই এলাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ হিসেবে ভারত যে মুখে না না করেও বসতে বাধ্য হলো সেটা ড. ইউনূসের একটি বড় সাফল্য। তার চেয়ে বড় সাফল্য এই বৈঠক নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিক্রিয়া।

ভারতের মিডিয়া ও মিডিয়ার মাধ্যমে প্রতিফলিত জনমতে যেটা বোঝা যাচ্ছে তাতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির এই বৈঠককে তারা খুব ভালোভাবে নেয়নি। এক ধরনের পরাজয়ের গ্লানি তাদের মনে কাজ করছে। তারা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ভারতবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করতে পছন্দ করেন। অথচ তার মধ্যে ভারতবিরোধী কোনো মনোভাব কেউ দেখাতে পারবেন না। কিন্তু ভারতীয়রা গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নতজানু নীতিতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছে। মর্যাদাপূর্ণ ও সহাবস্থানমূলক সম্পর্ককের যে কোনো প্রস্তাবনাকেই তারা ভারতবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে। ফলে, এই বৈঠকের পর তারা নানাভাবে বৈঠকটিকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু সার্বিকভাবে ভারতের শাসকদের মতো সে দেশের জনগণও মেনে নিয়েছে যে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা বলেই থাকতে হবে। 

অন্যদিকে, ভারত সম্পর্কে বাংলাদেশে যে তীব্র বিরোধিতা দেখা যায় তার ছিটেফোঁটাও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এই বৈঠকের পর দেখা যায়নি। বরং বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এই বৈঠককে খুবই ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। তাদের সামনে এটা স্পষ্টভাবে প্রতিভাত হয়েছে যে, ডক্টর ইউনুস বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাবান জাতি হিসেবে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এই মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান থেকে ভারতের সঙ্গে বৈঠক কোনোভাবেই অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি। 

আমার কাছে মনে হয় এই বৈঠকের সবচেয়ে বড় সফলতা এই জায়গায়। 

বৈঠক নিয়ে নানান রকমের বিশ্লেষণ আমার চোখে পড়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বিশ্লেষকদের নানা কথাবার্তা। আমি নিজে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বিষয়ে খুব বেশি আগ্রহী নই। কেননা আমাদের মতো রাষ্ট্রনেতা ও কূটনীতিকরাও ভালো করেই এই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বিষয়ে জানেন। ফলে তারা ছবি তোলার সময় সচেতনভাবেই নিজেদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এক্সপোজ করার চেষ্টা করেন। এ ধরনের বৈঠক থেকে স্বতঃস্ফূর্ত বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পাওয়া বেশ কঠিন। 

কিন্তু এই বৈঠকের কনটেন্ট বিষয়ে যদি আমরা মনোযোগ দেই তাহলে দেখব, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কাছে যে জিনিসগুলো চাওয়া হয়েছে সেগুলোর সবকটি ধারণাগত এবং তর্ক সাপেক্ষে নির্ধারণ করার ব্যাপার। 

যেমন, তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে আসছে। এ নিয়ে নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও প্রকাশ করছে। ফলে, এ নিয়ে কথা তোলা নতুন কোনো মাত্রা যোগ করেনি। তাছাড়া বিষয়টি যথেষ্ট তর্ক সাপেক্ষ। কেননা বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায় যথেষ্ট নিরাপদ অবস্থানে আছে। তাদের কেউ কেউ কখনো কখনো আওয়ামী লীগ করার কারণে রাজনৈতিক হামলার শিকার হলেও সেগুলোকে সাম্প্রদায়িক হামলা বলার কোনো সুযোগ নেই। সরকার তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। ফলে এ বিষয়ে নতুন করে তাগিদ দেওয়াটা একটা রুটিন কথা হিসেবেই বিবেচিত হবে। 

অন্যদিকে, ভারত যদি এই কথাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে সামনে আনতে চায় তবে বাংলাদেশও ভারতের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারে এবং সেই উদ্বেগ প্রকাশ করলে কেউ বাংলাদেশকে সমালোচনা করতে পারবে না। বরং ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে কথা বলতে শুরু করলে ভারত আন্তর্জাতিকভাবে চাপে পড়বে।

দ্বিতীয় যে কথাটি তারা গুরুত্ব দিয়ে বলেছে, তা হলো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এমন কথা যেন না বলা হয় যা দুদেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিশ্চিতভাবেই তারা সেভেন সিস্টার্স নিয়ে বাংলাদেশের কথাবার্তাকে বুঝিয়ে থাকবে। বলতে গেলে এটাই ভারতের নতুন কথা।

লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে, ভারত খুব বেশি প্রস্তুতি নিয়ে আলাপ করতে আসেনি। কংক্রিট কোন প্রস্তাবনা তাদের আলাপে ছিল না।

বিপরীতক্রমে, ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছেন সেগুলো খুবই কংক্রিট ও ভ্যালিড।

শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়টি খুবই ন্যায্য একটি দাবি। এবং এই দাবি আবশ্যিকভাবে ভারতকে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। গঙ্গা নদীর পানি চুক্তির নবায়ন ও তিস্তার পানির হিস্যা দাবি খুবই সময়োচিত ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাব ছিল। সীমান্তে হত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও তা-ই।

বোঝা যায়, ড. মুহাম্মদ ইউনূস যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। ভারতের দিক থেকে সেরকম প্রস্তুতি ছিল না।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কূটনীতি সম্পর্কে আমরা যে ধারণা পাচ্ছি, তাতে বোঝা যায় তিনি সাধারণ কোনো কূটনীতির রাস্তায় হাঁটছেন না। তিনি যে দেশগুলোতে যাচ্ছেন এবং দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে যে সম্পর্ক তৈরি করছেন তাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নতুন করে সম্পর্ক করার চেষ্টা করছেন না। বরং এই নেতাদের সঙ্গে তার আগের সম্পর্ককে ঝালাই করে নিয়ে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলার রাস্তায় হাঁটছেন।

একথা আমরা কেউই অস্বীকার করতে পারব না যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বনেতাদের কাছে খুবই পরিচিত মুখ। তার চিন্তা বিশ্বকে কয়েক দশক ধরে আলোড়িত করে চলেছে। ফলে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নতুন করে সম্পর্ক নির্মাণ করার চিন্তা তাকে করতে হচ্ছে না। আগের রেফারেন্স তিনি ইউজ করতে পারছেন। চীন সফরের সময়েও আমরা দেখলাম, প্রেসিডেন্ট শি আগে রেফারেন্স টেনে ড. ইউনূসের সঙ্গে তার আগের যোগাযোগের কথা উল্লেখ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ সফরের সময়ও একই রকম ঘটনা আমরা ঘটতে দেখেছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সময়ও ড. ইউনূস তার এই কূটনীতি কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। নরেন্দ্র মোদি ২০১৫ সালে তাকে স্বর্ণপদক দিয়েছিলেন, সেটি তিনি একটি ছবি উপহার দেওয়ার মাধ্যমে মনে করিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ, আপনার সঙ্গে আমার দেখা তো নতুন ঘটনা নয়। আপনি পুরনো ঘটনা মনে করুন এবং মন খুলে আমার সঙ্গে এনগেজ হোন।

৩০ মিনিটের আলোচনায় নরেন্দ্র মোদি কতটা মন খুলেছেন সেটা জানা খুব কঠিন। কিন্তু এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বরফ অনেকটাই গলেছে। সম্পর্কের পরিবর্তন সহসা হবে না। ভারত নানাভাবে নানা ষড়যন্ত্র করে যাবে। তাদের মিডিয়া ও বিশ্লেষকরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষোদগার চালিয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবে। বাংলাদেশে তাদের তাবেদাররা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। তাদেরকে একটি বিষয় পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ আর পুরনো ব্যবস্থায় ফিরে যাবে না। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মতো করে আর কোনো তাবেদার শাসক ভারত শীঘ্রই প্রতিস্থাপন করতে পারবে না। ফলে নতুন বাংলাদেশের সঙ্গেই তাদের কথাবার্তা, সম্পর্ক ও বাণিজ্য বিনিময় করতে হবে। 

এই বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংককের বৈঠক একটা বড় পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হবে।

লেখক : কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক