বেনজীরকে দেশ ছাড়ার সুযোগ দিয়েছে শেখ হাসিনা: রিজভী

ফাইল ছবি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আইজিপি বেনজীরকে বাংলাদেশ ত্যাগ করার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রীরা।
 
তিনি বলেন, দেশের মানুষকে জিম্মি করে তাকে সম্পদের পাহাড় গড়ার সুযোগ করে দিয়েছে এ সরকার। তিনি বিদেশে গেছেন কি-না তা রহস্যঘেরা। বেনজীর কোথায় আটলান্টিকে তেলাপিয়া মাছ ধরছেন কি-না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তা ভালো বলতে পারবেন।  ভারতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি খুন হয়েছেন তাও রহস্যঘেরা বলে মন্তব্য করেন তিনি । 
 
রবিবার (২ জুন) জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লা জেলার মেঘনা উপজেলা বিএনপি আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 
 
এ সময় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়া।
 
উপজলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াদুদ মুন্সির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আজহারুল ইসলাম শাহীনের পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন মেজবাহ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মাহবুবুল ইসলাম, এমরামুজ্জান বিপ্লব, সালা উদ্দিন শিশির, শেখ শামীম, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান সরকারক ও সদস্য সচিব এ এফ এম তারেক মুন্সি, বিএনপি নেতা ইমতিয়াজ আহমেদ বকুল, যুবদল নেতা ওমর ফারুক কায়সার,জাকির হোসেন প্রমুখ।
 
রিজভী বলেন, শহীদ জিয়া এমন একজন মানুষ ছিলেন তার যে সততা, রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষতা ছিল তা ছিল অতুলনীয়। তিনি শুধু সাধারণ মানুষ ছিলেন না, তিনি ছিলেন বহুগুণে গুণান্বিত একজন অসাধারণ মানুষ। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করতেন না। খন্দকার মোশতাক ক্ষমতা দখল করে বঙ্গভবন থেকে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে দিয়েছিল, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে তার ছবি বঙ্গভবনে টানিয়ে ছিলেন। আর শেখ হাসিনা হলেন চরম প্রতিহিংসাপরায়ণ নেত্রী। তিনি শহীদ জিয়ার নাম বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। নানা চক্রান্ত করে দেশি-বিদেশি যড়যন্ত্রেই জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। বাপের ব্যর্থতা ঢাকতে শেখ হাসিনা প্রতিদিন গুম-খুন অব্যাহত রেখেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি ।
 
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বাংলাদেশের মাথা ভারতের কাছে বিক্রি করে দেয়। মোংলা পোর্ট পরিচালনার জন্য ভারতকে দিয়ে দিয়েছেন ডামি সরকার টিকে থাকতে।
 
রিজভী বলেন, সরকার পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ডিমের দাম দফায় দফায় বাড়িয়ে জনগণের নাভিশ্বাস তুলেছে। এই অতিরিক্ত টাকায় বিদেশি লোন পরিশোধ করছে। কারণ বিদেশি লোন নিয়ে তা লুটপাট করেছে। জনগণের সরকার নয় বলে তারা খেয়ালখুশি মতো দাম বাড়ায়। অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে কোনো পণ্যের দাম না বাড়লেও শুধু লুটপাট ও বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে তাদের সিন্ডিকেট দাম বাড়ায়।
 
বিএনপি নেতা বলেন, আমাদের ভাবতে অবাক লাগে একজন সোনা চোরাকারবারি কিভাবে এমপি হন। তারপর তিনি পাশের দেশে গিয়ে খুন হন। এখন পর্যন্ত তার লাশটিও পাওয়া যায়নি। তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়।
 
রুহুল কবির রিজভী বলেন, মানুষের পকেট কেটে অনাহারে রেখে আওয়ামী লীগ ফুর্তি করতে ভালোবাসে। ১৯৭৪ সালেও মানুষকে কলাপাতা চিবিয়ে খেতে দেখেছি৷ ওরা মানুষের হাহাকার ও খাদ্য নিয়ে রসিকতা করে। খবরের কাগজে পড়ছি কোনো রকমে টিকে থাকার জন্য মা তার সন্তানকেও বিক্রি করে দিচ্ছেন।
 
অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়া বলেন, জিয়াউর ছিলেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বহু দলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। তিনি সেদিন যদি দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা না দিতেন তাহলে এত তাড়াতাড়ি দেশ স্বাধীন হতো কনা সন্দেহ ছিল। তিনি বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুঁড়ি থেকে স্বনির্ভর বাংলাদেশ বানিয়েছিলেন।
 
তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার আদর্শকে লালন করে এ দুঃশাসনের পতন ঘটানো হবে। সরকার হটাতে সামনে যে কর্মসূচি আসবে আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন তাহলে সরকারের পতন হব। ২০২৪ সালেই এ সরকারের পতন ঘটবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।